প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

লাইটার জাহাজ ভাড়ায় নিতে হবে অনুমতি

০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:৪৭:৫৮ | আপডেট: ৩ years আগে
লাইটার জাহাজ ভাড়ায় নিতে হবে অনুমতি

সালেহ নোমান, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত লাইটার জাহাজের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ- ওয়াটার ট্রান্সপোর্টেশন সেলের (ডব্লিউটিসি) কার্যক্রম তদারকির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌপরিবহন অধিদপ্তর (ডিওএস)।

বন্দরের বাইরের নোঙ্গর থেকে পণ্য পরিবহন নিয়ে আমদানিকারক ও ডব্লিউটিসি’র মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। ডব্লিউটিসি’র বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ শিপিং সিস্টেম জিম্মি করার অভিযোগ আমদানিকারকদের।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত প্রস্তুতকারক বিএসআরএম এর একটি অভিযোগের পর বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের (বিসিসি) একটি সাম্প্রতিক আদেশ, ডব্লিউটিসি’র কার্যক্রম নিয়ে ফের বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে জাহাজগুলো চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ পণ্য পরিবহন করে।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো: মঞ্জুরুল কবির বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের (বিসিসি) আদেশের প্রেক্ষিতে ডব্লিউটিসির কার্যক্রমের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

নৌপথে পরিবহনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করছে ডব্লিউটিসি। নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুমোদিত এ সংস্থাটি আমদানিকারকদের চাহিদার ভিত্তিতে প্রতিদিন জাহাজ বরাদ্দ দেয়। দেশের প্রায় ২ হাজার ২০০টি জাহাজের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৭০০টি নিয়ন্ত্রণ করে ডব্লিউটিসি।

সম্প্রতি এক নির্দেশনায় বিসিসি বলেছে- কেউ যদি উন্মুক্ত বাজার থেকে লাইটার জাহাজ ভাড়া করতে চায়, তাহলে তাকে এর জন্য অনুমতি নিতে হবে এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় (এমওএস) এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তর মুক্ত বাজার থেকে জাহাজ ভাড়ায় প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

সাধারণত, আমদানিকারকরা জাহাজ মালিকদের সাথে সরাসরি চুক্তি করতে পারে না। কারণ, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য ডব্লিউটিসি থেকে জাহাজ ভাড়া করতে হয়।

বিএসআরএম-এর সাপ্লাই চেইন প্রধান সঞ্জয় কুমার ঘোষ বলেন, এ পদ্ধতিটি মুক্তবাজার ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, যে কারণে আমদানিকারকরা বারবার আপত্তি তুলেছেন। একই সমস্যা আমরা প্রতিযোগিতা কমিশনের কাছে উত্থাপন করেছি, এর প্রতিকারও চেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ডব্লিউটিসির নিয়ম অনুসরণ করে জাহাজ ভাড় করায় সরকারের বেশ কিছু মেগা প্রকল্পে পণ্য সরবরাহ করতে আমাদের সমস্যা হয়েছে। আমরা সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে মালিকদের সাথে কথা বলতে চাই এবং সরাসরি জাহাজ ভাড়া করতে চাই, যা এখন সম্ভব হচ্ছে না।

নৌপরিবহন বিভাগের কর্মকর্তা কবির বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য ডব্লিউটিসি থেকে জাহাজ ভাড়া নেয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। কিন্তু বিসিসি’র আদেশে জাহাজের ভাড়া প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে কেউ একচেটিয়া ক্ষমতা প্রয়োগ করতে না পারে।

ডব্লিউটিসির নির্বাহী পরিচালক মাহাবুব রশিদ বলেন, জাহাজ মালিকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে, যা দেশের অন্যান্য পরিবহন খাতেও প্রচলিত রয়েছে।

তিনি বলেন, জাহাজ মালিকরা এ সিস্টেমে সন্তুষ্ট এবং এখানে একচেটিয়া কোনো কর্তৃত্ব নেই। যে কেউ বাইরে থেকে জাহাজ ভাড়া নিতে পারে এবং জাহাজের মালিকরা ডব্লিউটিসি’র বাইরে আলাদাভাবে তাদের জাহাজ পরিচালনাও করতে পারে।