প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

সুতার সংকটে হোম টেক্সটাইল খাত

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:০৬:৫২ | আপডেট: ৩ years আগে
সুতার সংকটে হোম টেক্সটাইল খাত

আরিফুর রহমান তুহিন

বিপুল সংখ্যক বিদেশি অর্ডার থাকার পরও কঠিন সময় পার করছেন দেশের হোম টেক্সটাইল রপ্তানিকারকরা। দেশীয় সুতা উৎপাদনকারীরা চাহিদা পূরণ করতে না পারায় পণ্য উৎপাদনে সমস্যায় পড়েছেন তারা।

সেইসাথে বন্ড লাইসেন্স না থাকা এবং স্থলবন্দরগুলোর মাধ্যমে আংশিক চালানে বিদ্যমান বাধার কারণে সুতার শুল্কমুক্ত আমদানিও করতে পারছে না এ খাতের রপ্তানিকারকরা।

যে কারণে এ সমস্যা সমাধানে এখন সরকারের হস্তক্ষেপ চায় হোম টেক্সটাইল সেক্টরের শীর্ষ সংস্থা বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিনেন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমইএ)।

বিটিটিএলএমইএ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সোহেল দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, আমরা সুতা প্রস্তুতকারকদের সাথে কথা বলেছিলাম। তারা জানিয়েছিল যে, তারা আমাদের চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। অন্যদিকে, আমাদের সদস্যদের মধ্যে মাত্র ৪ জনের বন্ড লাইসেন্স আছে। তাহলে, কিভাবে আমরা আমাদের চাহিদা পূরণ করব?

বাণিজ্যমন্ত্রীকে পাঠাতে আবেদন সংবলিত একটি চিঠির খসড়া ইতোমধ্যেই তৈরি করেছে বিটিটিএলএমইএ। যাতে সুতা আমদানি শুল্কমুক্ত করা অথবা যেন নামমাত্র শুল্ক অনুমোদন করা হয়।

শাহাদাত হোসেন সোহেল বলেন, আমরা একটি চিঠির খসড়া তৈরি করছি, যা দুই-তিন দিনের মধ্যেই বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে, যাতে আমাদের সুতা আমদানির জন্য শুল্কমুক্ত বা নামমাত্র শুল্ক দিয়ে চাহিদা পূরণে সহায়তা করে। আর যখন দেশীয় উৎপাদকরা আমাদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে, তখন সরকার এ সুবিধা প্রত্যাহার করলে কোনো সমস্যা নেই।

বিটিটিএলএমইএ এর তথ্যানুসারে, দেশের হোম টেক্সটাইল সেক্টর ১০ (সিঙ্গেল) এবং ১৬ কাউন্ট সুতা ব্যবহার করে, যার মধ্যে ৮০ শতাংশই দেশীয় উৎপাদনকারীরা সরবরাহ করে। যদিও, সাম্প্রতিক সময়ে ডেনিম রপ্তানির কারণে, এ সুতার চাহিদা বেড়েছে।

হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে গত অর্থবছর থেকে। এখন এ খাতের মোট চাহিদার মাত্র ৫০ শতাংশ পূরণ করতে পারছে দেশীয় সুতা উৎপাদনকারীরা।

অন্যদিকে, দেশীয় সুতা উৎপাদনকারীদের উন্নতিতে সহায়তার জন্য মিশ্র সুতায় ৩১ শতাংশ এবং তুলার সুতা আমদানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে সরকার।

বিটিটিএলএমইএ জানায়, সংগঠিনটির ১১৩ সদস্যের মধ্যে বন্ড লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৪টি কারখানার।

বিটিটিএলএমইএ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সোহেল বলেন, সরকার যদি শুল্কমুক্ত বা নামমাত্র শুল্কে আমদানির অনুমতি দেয়, তাহলে আমরা পাকিস্তান থেকে কম দামে সুতা আমদানি করব। এটি আমাদের ভালো পরিমাণ রপ্তানি আয় থেকে লাভবান হতে সহায়ক হবে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, করোনাকালে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৯.১৭ শতাংশ বেড়েছে হোম টেক্সটাইল খাত থেকে রপ্তানি আয়। যার পরিমাণ ১.১৩ বিলিয়ন ডলার; এক বছর আগের একই সময়ে যে আয় ছিল ৫৫৯ মিলিয়ন ডলার।

রপ্তানিকারকরকদের দাবি, এ খাতের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে সম্প্রসারণের একটি বিশাল সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। কারণ, ব্লাসফেমি আইনের অপব্যবহারের কারণে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট পাকিস্তানের জিএসপি প্লাস মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেবে।