আরিফুর রহমান তুহিন, মোহাম্মদ নাহিয়ান
ভোজ্যতেলের দাম ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির এমন ঘোষণার একদিন পরই সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬৫ টাকা করেছেন উৎপাদকরা। এছাড়াও, রাজধানীর কিছু এলাকায় খুচরা বিক্রেতারা প্রতি লিটার সয়াবিন তেল এখন বিক্রি করছেন ১৬৫-১৬৮ টাকায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, উৎপাদকরা নিজেরাই এ দাম বাড়িয়েছে, মন্ত্রণালয় দাম বাড়ানোর পক্ষে নয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এএইচএম শফিকুজ্জামান দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, “তারা (ভোজ্যতেল উৎপাদক) সয়াবিন তেলের দাম বাড়াতে আবেদন করেছিল এ যুক্তিতে যে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে। কিন্তু একই সময়ে, তারা আমাদের নিশ্চিতকরণের আগেই 8 টাকা দাম বাড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, “১৯ জানুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন, ৬ ফেব্রুয়ারির আগে কোনো দামের পরিবর্তন হবে না। তাই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর অনুমতি মন্ত্রণালয় দেবে না।”
অন্যদিকে, ভোজ্যতেল উৎপাদনকারীরা দাবি করেছেন, তাদের দাম বাড়াতে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সিটি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেছেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে ৮ জানুয়ারি থেকে আমরা প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়াও, আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এটির অনুমতি দেয়ার জন্য আবেদন করেছি এবং মন্ত্রী আমাদেরকে ১৬৮ টাকা থেকে ৩ টাকা ছাড় দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
তিনি বলেন, “মন্ত্রী বলেছেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। আমরা তার অনুরোধকে সম্মান করেছি এবং ৩ টাকা ছাড় দিচ্ছি।”
খুচরা বাজার পরিস্থিতি
খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকা থেকে ১৫৫ টাকায়। যা, এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪৫ টাকা থেকে ১৪৮ টাকা।
তেজগাঁওয়ের কাশেম জেনারেল স্টোরের মালিক মো: কাশেম বলেন, বর্তমানে প্রতি লিটার রূপচাঁদা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ টাকা। এছাড়া প্রতি লিটার বসুন্ধরা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা এবং পুস্টি সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬০ টাকায়।
তিনি আরও বলেন, বসুন্ধরা সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৭৬০ টাকায়, যা কয়েকদিন আগে ছিল ৭২০ থেকে ৭৩০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের ভোক্তা আরাফাত হোসেন বলেন, “আগের সময়ের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়েছে। ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি কমাতে সরকারের উচিত কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা।”
অনেক ভোক্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি তাদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে।