প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

১০ বছরে রপ্তানি আয়ের ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে আসেনি

উল্লেখযোগ্য অংশ পাচার হয়ে থাকতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা
তালুকদার ফরহাদ ও আরিফুর রহমান তুহিন
২৪ আগস্ট ২০২২ ২১:৩৫:৪৯ | আপডেট: ২ years আগে
১০ বছরে রপ্তানি আয়ের ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে আসেনি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে সরকার যখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য উৎস থেকে ঋণ চাইছে, তখন দেখা যাচ্ছে গত ১০ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের ৪৫ বিলিয়ন ডলার দেশে আসেনি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর হিসেবে ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৫৯.২১ বিলিয়ন ডলারের মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ওই রপ্তানি মূল্যের বিপরীতে দেশে এসেছে ৩১৪.৩৭ বিলিয়ন ডলার। অবশিষ্ট ৪৪.৮৪ বিলিয়ন ডলারের কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। যা মোট পণ্য রপ্তানি মূল্যের ১২.৪৮ শতাংশ।

এ বিষয়ে জানতে রপ্তানিকারক, ইপিবি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্য বিজনেস পোস্টের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তারা এর সঠিক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

তবে শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি আয়ের ব্যবধান ৫ থেকে ৬ শতাংশ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে তারাও ১২.৪৮ শতাংশ ব্যবধানকে ‘চরমভাবে অস্বাভাবিক' বলে মনে করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই অর্থের একটি বড় অংশ রপ্তানির আড়ালে পাচার হয়ে থাকতে পারে। তারা বলছেন, রপ্তানি আয়ের এই ব্যবধানের একটি অংশও যদি পূরণ করা যায় তাহলে রিজার্ভ সংকট মেটানো যাবে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছিল, বর্তমানে সেটি ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

রপ্তানি পণ্যের মূল্য ও দেশে আসা রপ্তানি আয়ের মধ্যে বড় ধরনের ফারাক থাকতে পারে না উল্লেখ করে, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বিজনেস পোস্টকে বলেন, রপ্তানি আয় থেকে ৩০ ডলার ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুই মাসের জন্য আমার লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) সুবিধা স্থগিত করেছিল।

এত বিপুল পরিমাণ অর্থ কেন এখনো দেশে আসেনি তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, যেই পরিমাণ অর্থমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়, সেই পরিমাণ অর্থ দেশে আসছে না। আয়ের বিশাল ব্যবধান অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কোথাও অবশ্যই কোনো না কোনো ভুল আছে। এত টাকা কোথায় গেল তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খুঁজে বের করা উচিত। একইসঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করেও সামনে আনা উচিত।

বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি সেল গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

রপ্তানি পণ্যের মূল্য বনাম দেশে আসা আয়

ইপিবি কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক ও বাৎসরিক ভিত্তিতে রপ্তানি আয়ের তথ্য প্রকাশ করে। শুল্ক বিভাগের (কাস্টসমস) কাছে জমা দেয়া রপ্তানিকারকদের তথ্য রাজস্ব বোর্ড সংগ্রহ করে থাকে।

কাস্টমসের কাছে জমা দেয়া রপ্তানিকারকদের বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করেছে বিজনেস পোস্ট।

এতে দেখা যায়, রপ্তানিকারকের নাম, গ্রাহকের নাম, রপ্তানি গন্তব্য, এইচএস কোড, পণ্যের মোট পরিমাণ, প্যাকেটের পরিমাণ, মোট ওজন, নেট ওজন, ইউনিট মূল্য, পণ্যের মোট মূল্য, বিনিময় হার এবং ব্যাংকের নামসহ মোট ৫৬টি তথ্য উল্লেখ করতে হয়।

ইপিবি'র তথ্যে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩৬.৬৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সে বছর দেশে ৩২.৫৪ বিলিয়ন ডলারে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন হয়েছিল বা এসেছিল। অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪.১৩ বিলিয়ন ডলার ( যা মোট পণ্য মূল্যের ১১.২৬ শতাংশ) রপ্তানি আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে দেশ।

একইভাবে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪০.৫৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হলেও দেশে এসেছে ৩৩.৩৭ বিলিয়ন ডলার। সেখানেও ৭.১৬ বিলিয়ন ডলারের (১৭.৬৬ শতাংশ) তারতম্য দেখা যায়।

এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৩.৬৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি মূল্যের বিপরীতে ২৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় এসেছে পার্থক্য ৩.৭ বিলিয়ন ডলার (১০.৯৯ শতাংশ)।

২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৮.৭৬ বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে এসেছে ৩৩.৯৭ বিলিয়ন ডলার, ব্যবধান ৪.৭৯ বিলিয়ন ডলার বা ১২.৩৬ শতাংশ।

গেল অর্থবছরে ৫২.০৮ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানির বিপরীতে দেশে এসেছে ৪৩.৬১ বিলিয়ন ডলার, ব্যবধান ছিল ৮.৪৮ বিলিয়ন ডলার ১৬.২৮ শতাংশ।

এদিকে, ইপিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পরযন্ত মোট ১৭ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেড় যুগের বেশি সময়ে ৪৭৫.০১ বিলিয়ন ডলারের মূল্যের পণ্য রপ্তানি হলেও দেশে আয় এসেছে ৪১৯.৮৯ বিলিয়ন ডলার। ব্যবধান ছিল ৫৫.১২ বিলিয়ন ডলার বা ১১.৬০ শতাংশ।

বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, নির্বাচনী বছরগুলোকে সামনে রেখে তৈরি হওয়ার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সময় রপ্তানি পণ্যের মূল্য ও দেশে আসা আয়ের মধ্যে ব্যবধান বেড়ে যায়।

যেমন-২০০৬ অর্থবছরে এই ব্যবধান ছিল ১১.০৪ শতাংশ, ২০০৮ অর্থবছরে ১০.১৩ শতাংশ, ২০১৩ অর্থবছরে ১২.০৭ শতাংশ, ২০১৭ অর্থবছরে ১৩.০৮ শতাংশ এবং ২০১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৭.৬৭ শতাংশ রেকর্ড ব্যবধান ছিল।

রপ্তানি পদ্ধতি কি?

পণ্য রপ্তানির জন্য দুটি প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন রপ্তানিকারকরা। একটি হলো- লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) এবং অপরটি টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (টিটি)।

তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এলসি পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন রপ্তানিকারকরা। সাধারণত অর্ডার পাওয়ার পর একটি এলসি খোলেন এবং বন্ড সুবিধা পেতে তাদের ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইউডি) সংগ্রহ করতে হয়।

এরপর যদি চালানগুলো এফওবি (ফ্রেইট অন বোর্ড) হিসাবে মনোনীত হয়, তাহলে চালান গুদাম ছেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিক্রির জন্য নথিভুক্ত করে বিক্রেতারা। গুদামে যাওয়ার পথে অবশ্যই ডেলিভারি চার্জও দিতে হবে ক্রেতাদের।

পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য বা পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ে অনেক সময় তৃতীয় পক্ষকে মনোনীত করে ক্রেতারা। তৃতীয় পক্ষের ছাড়পত্র, রপ্তানি অনুমতি এনবিআরের কাছে জমা দেয়ার পর রপ্তানি পেমেন্ট দাবি করার যোগ্য হয়ে ওঠেন একজন রপ্তানিকারক।

টিটি পদ্ধতি প্রায় একই, তবে পণ্য রপ্তানির আগে একজন ক্রেতাকে অবশ্যই অর্থ প্রদান করতে হবে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টিটি সিস্টেম যদি কম ব্যবহৃত হয়, তবে আয় আর পেমেন্টে ব্যবধানের সুযোগ কম থাকে। তবে এলসি পদ্ধতিতে ব্যবধানের একটি বড় সুযোগ রয়েছে, তবে সেটি কোনভাবে ৫ থেকে ৬ শতাংশের বেশি নয়।

কত সময় লাগে পেমেন্ট পদ্ধতিতে?

এফওবি সিস্টেম ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করে বেশিরভাগ রপ্তানিকারক। এই প্রক্রিয়ার অধীনে, যখন তৃতীয় পক্ষের পরিদর্শন সম্পন্ন হয়, এবং ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট (সিএন্ডএফ) দ্বারা পণ্যগুলি গ্রহণ করা হয়, তখন পণ্যের সকল দায় পড়ে ক্রেতার উপর৷ এমন পরিস্থিতিতে চুক্তিপত্র অনুযায়ী রপ্তানিকারকদের অর্থ দিতে বাধ্য থাকেন ক্রেতারা।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন,সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে রপ্তানি নথি জমা দেয়ার পরে এক মাসের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করে থাকেন নির্ভরযোগ্য ক্রেতারা। তবে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সাধারণত ৬০-৯০ দিন সময় লাগে।

তবে কিছু নন-ব্র্যান্ড ক্রেতা আছেন যারা পেমেন্ট ইস্যু করতে ১২০ দিন পর্যন্ত সময় নেন এবং কখনও কখনও পেমেন্ট ৬ মাস পর্যন্ত বিলম্বিত হয়।
এছাড়াও ক্রেতাদের অর্থ পরিশোধ না করার কয়েকটি ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আইনি ব্যবস্থাও নিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। তবে এ ধরণের ঘটনা একেবারেই সামান্য।

ব্যবধান বোঝাতে পারেনি ইপিবি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক

৪৪.৮৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের ব্যবধানের ব্যাখ্যার জন্য ইপিবি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছিল দ্য বিজনেস পোস্ট। কেন অর্থ আসলো না সেই ব্যাখ্যা দিতে রাজি হননি তারা। ইপিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যুরো শুধুমাত্র রপ্তানি প্রচারে কাজ করে। রপ্তানিকারকরা পেমেন্ট পেয়েছেন কি না তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিষয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলছেন, গত ১০ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান কেন এত বড় হয়ে উঠেছে, এ বিষয়ে তাদের কোনও ধারণা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “কখনও কখনও ক্রেতা পণ্যে ত্রুটি খুঁজে পান এবং এর জন্য তারা ছাড় চান, তবে রপ্তানি আয়ের বিশাল ব্যবধানের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।”

ব্যবধান নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মোঃ সিরাজুল ইসলামও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ কর্মকর্তা বলেন, কখনও কখনও দেশ থেকে বিদেশে পণ্য পাঠানো হয় যা রপ্তানি হয় না –যেমন উপহার। কিন্তু সেগুলিকে রপ্তানি হিসাবে দেখানো হয়, সেটাও কম নয়। ব্যবধানের জন্য এটা বড় কারণ হতে পারে।

তদন্ত দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা

রপ্তানি আয়ের স্বাভাবিক ব্যবধান ৫-৬ শতাংশ উল্লেখ করে শিল্পের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা বলছেন, রপ্তানিকারক চালানের সময়সীমা অতিক্রম করলে ক্রেতারা একটি নতুন জাহাজ বা কার্গো প্লেন বুক করে থাকেন। তখন পেমেন্ট থেকে ভাড়া কেটে নেন।

রপ্তানিকারকরা আরও দাবি করেন, অনেক বিদেশি বায়িং হাউজ মোট রপ্তানি আয় থেকে তাদের কমিশন পায়। কখনও কখনও ক্রেতারাও দেউলিয়া হয়ে যায় এবং অর্থপ্রদান বছরের পর বছর আটকে থাকে। যখন ক্রেতাদের বিক্রি ধীরগতিতে চলে যায় তখন ডিসকাউন্টের জন্য তারা অনুরোধ করে থাকেন।

বিকেএমইএ'র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, এ ধরনের সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক।

কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, রপ্তানিকারকরা যখন তাদের পণ্য রপ্তানি করে, তখন ক্রেতারা পণ্যের দাম পরিশোধ করতে বাধ্য হয়। তবে কোনো রপ্তানিকারক তাদের আয় ফেরত আনতে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।

ব্যাংকাররা আরও বলেন, কোন কারণে ক্রেতারা রপ্তানিকারকদের কাছে ছাড় চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবশ্যই জানাতে হবে। মোট রপ্তানির মাত্র পাঁচ শতাংশ ক্ষেত্রেই এমন দেখা যায়।

রপ্তানি আয়ের ব্যবধান তদন্তের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, অর্থ পাচারের কারণে এই ব্যবধান ঘটতে পারে। যে সমস্যাটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলছে, কেউ সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে না।

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) একজন সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, যদি অন্য কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা না থাকে, তাহলে অবশ্যই অর্থ পাচার হয়েছে।

পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি বুঝতে পারছি না যে গুরুতর এমন একটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়নি!

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “রপ্তানি আয়ের ব্যবধান নিয়ে প্রতি বছর যে প্রতিবেদনগুলো আসছে, সেগুলো রপ্তানির নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের সত্যতা দেয়।”

তিনি বলেন, “দুঃখের বিষয় হচ্ছে সরকার বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচারকে কখনো গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে, এমন কোন প্রমাণও নেই।”

এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করে তিনি আরও বলেন, জড়িতদের মধ্যে অনেকেই সরকারের ছত্রছায়ায় রয়েছেন।