সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে ছাত্রকে গুলি করা সেই শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগজিন, ৮১ রাউন্ড গুলি, ১০টি নানা ধরনের চাকু, দুটি কাতানা ছুরিসহ নানা ধরনের অস্ত্র।
গতকাল সোমবার রাতে ডা. রায়হান শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র দুটি অবৈধ বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ওই ছাত্রকে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে এবং অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন।
এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে (২২) গুলি করেন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এরপর রাত সোয়া ১২টার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদি হয়ে সদর থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
গতকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার সকালে ডা. রায়হান শরীফের বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ওই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনের রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা। তখন ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, রায়হান শরীফ কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক। তিনি সর্বদাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তিনি সবসময় ব্যাগে অস্ত্র নিয়ে এসে ক্লাসে টেবিলের ওপর রেখে লেকচার দেন। ছাত্র-ছাত্রীরা এ বিষয়ে আপত্তি তুললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
শিক্ষার্থীকে গুলির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওসি জুলহাজ উদ্দিন বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এছাড়াও তার কাছ থেকে বেশকিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।আসামির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র দুটি অবৈধ। যে কারণে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হবে।’