জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিষয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার আমির পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক সশস্ত্র গ্রুপ কেএনএফের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে তিন লাখ টাকা এবং কেএনএফ সদস্যদের খাবারের খরচ বহন করতে হবে। গত বছর হওয়া চুক্তিটি আগামী বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি ১০ জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
শুক্রবার র্যাবের মুখপাত্র প্রকাশ করেছেন যে- গ্রেপ্তারদের মধ্যে বান্দরবান ও রাঙামাটি থেকে সদ্য চালু হওয়া জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সাত সদস্য এবং সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী দল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস্য রয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, এলিট ফোর্সের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল যারা আশ্রয় নিচ্ছেন এবং সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে তাদের ধরা।
বৃহস্পতিবার রাতে তাদের আটক করা হয় বলে কমান্ডার মইন জানান। গত ৯ অক্টোবর এসব এলাকায় অভিযান শুরু করে র্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন- সুনামগঞ্জের সৈয়দ মারুফ আহমদ ওরফে মানিক(৩১), পিরোজপুরের ইমরান হোসাইন ওরফে সাওন(৩১), ঝিনাইদহের কাওসার ওরফে শিশির(৪৬), সিলেটের জাহাঙ্গীর আহম্মেদ ওরফে জনু(২৭), বরিশালের মো. ইব্রাহিম ওরফে আলী(১৯), সিলেটের আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাপ্পি(২৩), সুনামগঞ্জের রুফু মিয়া(২৬), বান্দরবানের জৌথান স্যাং বম (১৯), স্টিফেন বম(১৯), এবং মাল সম বম (২০)।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেফতাররা স্বীকার করেছে যে তাদের অর্থের বিনিময়ে আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর (কেএনএফ) সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।
কমান্ডার মইন বলেন, ‘এ বিষয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানা যাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্গম পাহাড়ি এলাকা (বেশিরভাগ দুই হাজার ৫০০ ফুট উঁচু) এবং গভীর বনের মধ্য দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি যেখানে তারা (জঙ্গিরা) লুকিয়ে আছে। তারা আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় জঙ্গি ক্যাম্পে ৫০ জনের বেশি জঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
র্যাব কর্মকর্তা সম্প্রতি কিছু যুবকের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও উল্লেখ করেছেন। যারা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন তাদের বেশিরভাগই এই ঘন প্রত্যন্ত অঞ্চলে লুকিয়ে আছেন।
তিনি বলেন, অভিযানের সময় কোনো জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অভিযানে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নিরাপদ ছিল।
বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে র্যাব কমান্ডার বলেন, নিরাপত্তা অভিযান চলমান থাকায় স্থানীয় প্রশাসন রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৮ অক্টোবর সকাল থেকে দর্শনার্থীদের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ‘এখানে আমাদের অপারেশন শেষ হলেই তারা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।’
তিনি বলেন, যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী দল জঙ্গিদের সহায়তা করছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।