প্রচ্ছদ ›› অপরাধ

মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:১১:১৩ | আপডেট: ১ year আগে
মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা হাইকোর্টের

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।

আদালতে মিন্নির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন ও জামিউল হক ফয়সাল। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

জামিউল হক ফয়সাল বলেন, ‘ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথ কেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানি করতে অপারগতা করেছেন তা প্রকাশ করেননি। আমরা একই জামিন আবেদন হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে নিয়ে যাব।’

মিন্নি বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন। তিনি তার আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও এএম জামিউল হক ফয়সালের মাধ্যমে এই আবেদনটি জমা দিয়ে বলেন, তিনি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। বরং তিনি রিফাতকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স অ্যাকাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।

এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয় জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা।

পরে একই বছরের ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় নয়ন বন্ড। হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ওই বছরের ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওই দিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন।

বিচার শেষে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ৬ আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার দণ্ডেও দণ্ডিত করেন। বাকি চার জনকে খালাস দেওয়া হয়। পরে নিয়ম অনুসারে একই বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে। পাশাপাশি ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলো– মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান।

মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন– মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেছিল মিন্নি। পরে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর সে আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জরিমানাও স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।