প্রচ্ছদ ›› অপরাধ

মেডিকেল কলেজের ক্লাসে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে ছাত্র আহত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
০৪ মার্চ ২০২৪ ১৯:১১:১৪ | আপডেট: ৯ মাস আগে
মেডিকেল কলেজের ক্লাসে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে ছাত্র আহত

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফের পিস্তলের গুলিতে আহত হয়েছেন এক ছাত্র। এ ঘটনার পর শিক্ষককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ওই মেডিকেল কলেজের ক্লাসে মৌখিক পরীক্ষার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া।

গুলিবিদ্ধ ছাত্রের নাম আরাফাত আমিন তমাল। তিনি অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাকে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, কানের পাশ দিয়ে গুলি যাওয়ায় এক ছাত্রী আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম জানা যায়নি। তিনিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই ক্লাসে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রায়হান শরীফ কমিউনিটি মেডিসিনের লেকচারার। তিনি ক্লাস নেওয়ার সময়ে টেবিলের ওপর তার পিস্তলটি রেখে দিতেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করতেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী আফিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক রায়হান শরীফ ক্লাসে মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি আমাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমাদের কারও কি পোষা প্রাণী আছে? আমার একটা পোষা প্রাণী আছে।’’ এই বলে তিনি তার সঙ্গে থাকা একটি কাল ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে আমাদের দেখিয়ে বলেন, ‘‘এটা হচ্ছে আমার পোষাপাখি।” এ সময় হঠাৎ করেই পিস্তল থেকে গুলি বের হয়ে যায়। তখন গুলি একজনের পায়ে লাগে, আর একজনের কানের পাশ দিয়ে যায়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ছাত্রী সাংবাদিকেদর বলেন, ‘গত তিন মাস ধরে হাতে বন্দুক-ছুরি নিয়ে ক্লাসে আসতেন রায়হান শরীফ। আজ আমাদের একটি পরীক্ষা ছিল। তিনি এসে বলেছেন, ‘‘আজ যদি কেউ একটা শব্দ মিস করো, তাহলে তাকে আমি শুট করব।’’ তার বন্দুক ব্যাগের ভেতর ছিল। ব্যাগ থেকে বন্দুক বের করে ট্রিগারে গুলি ভরার পর আমার দিকে ধরল। আমি উত্তর দিতে পেরেছি বিধায় আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তারপর ছেলেরা ঢুকেছে স্যারের রুমে। যাকে গুলি করা হয়েছে, আজ সকালে ক্লাসে তাকে ‘‘দেখে নেওয়া’’র কথা বলেছিলেন স্যার। স্যার শুরু থেকে তাকে টার্গেট করে রেখেছিলেন। গুলির পরপরই ক্লাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমরা রায়হান স্যারকে আটকে রাখি।’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রায়হান শরীরের কাছে থাকা পিস্তলটি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া। তিনি বলেন, ‘পিস্তলটি ওই শিক্ষকের নিবন্ধিত কি না এখনো যাচাই করা যায়নি। শিক্ষক রায়হান আমাদের হেফাজতে আছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। শিক্ষকের শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’