প্রচ্ছদ ›› অপরাধ

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ মে ২০২৩ ১৩:৫৩:৪০ | আপডেট: ২ years আগে
লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড
আদালতে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান জসিমকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামিরা

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান জসিমকে গুলি করে হত্যার দায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুরে জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলী হোসেন বাচ্চু, মো. মোস্তফা, মো. খোকন, আবুল হোসেন, মোবারক উল্যা, কবির হোসেন রিপন, জাফর আহম্মদ ও হিজবুর রহমান স্বপন।

মেহেদী হাসান জসিম চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শ্রীরামপুর গ্রামের মফিজ উল্যার সঙ্গে একই বাড়ির মোবারক উল্যা ও আলী হোসেন বাচ্চুদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে মোবারকরা ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি মফিজ উল্যাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়।

এরপর থেকে মফিজের মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দেয়, না করলে হত্যা করা হবেও হুমকি দেওয়া হয়। এ জন্য মফিজ ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে না যেতে পেরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকতেন।

একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ মোবারকদের করা মামলাটি উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নুরনবী তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মফিজের ছেলে হাসান জসিমের নাম বাদ দেওয়ায় মোবারকরা চরম ক্ষিপ্ত হয়। এ কারণে জসিম ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের রাধাপুর গ্রামে আত্মীয় গোলাম মাওলার বাড়িতে আত্মগোপনে যায়।

জসিমের সঙ্গে তার বড় ভাই আবদুল হাই ও গোলাম মাওলার ভাই মাসুদ একই কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। ওইদিন দিবাগত গভীর রাতে আসামিরা জানালার গ্রিল ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে। এ সময় তারা জসিমের বুকে গুলি করে। তাকে বাঁচানোর জন্য অন্যরা এগিয়ে আসলে আসামিরা গুলি করার হুমকি দিয়ে তাদের পিটিয়ে আহত করে।পরে জসিমকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরদিন জসিমের বাবা মফিজ উল্যাহ বাদী হয়ে সদর থানায় মোবারকসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সবশেষ ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এতে সাক্ষ্য-প্রমাণে মোবারক উল্যা, আলী হোসেন বাচ্চু, অজি উল্যা, কবির হোসেন রিপন, হিজবুর রহমান স্বপন, আবুল কাশেম, সফিক উল্যসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

আসামিদের মধ্যে আবুল কাশেম, সফিক উল্যা, আমির হোসেন ও অজি উল্যা মারা গেছেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ রায় প্রদান করেন।

রায়ের সময় সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হিজবুর রহমান স্বপন পলাতক রয়েছেন।

রায়ের পর মামলার বাদী মফিজ উল্যা বলেন, ‘আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। মামলার রায়ে আমি সন্তুষ্ট।’