প্রচ্ছদ ›› অপরাধ

সহকর্মীর চাকরিচ্যুতিতে ক্ষুব্ধ দুদক কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:১৭:৪৭ | আপডেট: ৩ years আগে
সহকর্মীর চাকরিচ্যুতিতে ক্ষুব্ধ দুদক কর্মকর্তারা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ নিয়ে কর্মকর্তাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার অপসারণের ঘটনায় উত্তপ্ত দুদক কার্যালয়।

চাকরিচ্যুতির আদেশ প্রত্যাহার ও যে ধারা অনুয়ায়ী তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে, সেই ধারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সংস্থাটির দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

বৃহস্পতিবার দুদকের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়া প্রতিবাদে দুদকের ৩০০-র অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী গণস্বাক্ষর প্রদান করেন। দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা।

তথ্যমতে, ১৬ ফেব্রুয়ারি ডিএডি শরীফকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪(২)-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে শরীফ উদ্দিন, দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

এ বিষয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিল। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চালু ছিল এবং আরও অভিযোগ আসছিল, অনেকগুলো এসেছে। যে বিধানাবলী মানা প্রয়োজন, সেগুলো না মেনে অব্যাহতভাবে এ বিধির পরিপন্থী কাজ করে যাচ্ছিলেন শরীফ উদ্দিন। এ কারণে কমিশন ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, শরীফ উদ্দিন এই বিধিবিধানের বাইরে গিয়ে অনেক কাজ করেছেন। যেটি আমি এখানে পাবলিকলি বলতে চাই না। কমিশন মনে করেছে যে দুদকের ভাবমূর্তির রক্ষার্থে, সবার স্বার্থে ৫৪(২) ধারাটি এখানে প্রযোজ্য হয়েছে। তার মানে এই নয় যে এই ৫৪(২) ধারার প্রয়োগ আমরা সব জায়গাতেই করব। এটি একেবারে শেষ, একেবারে চরম পর্যায়ে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেটিরই একটি অংশ।

তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন যে উনি বদলির বিষয়ে, যে তদন্তকালে যে টাকা উদ্ধার হয়েছিল, সে বিষয়ে যে কার্যক্রম করেছিলেন, সে বিষয়ে হাইকোর্ট থেকেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। মানে সবকিছু মিলিয়ে চাকরিবিধি পরিপন্থীর কারণে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

চাকরি হারানোর পর গতকাল গণমাধ্যমকে শরীফ উদ্দীন বলেন, এখন তিনি নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়েই শঙ্কিত। আমার এ অপসারণ অসাংবিধানিক। আমার বিরুদ্ধে কমিশনের কিছু অনুসন্ধান চলমান। আমি সেগুলোর সন্তোষজনক জবাবও দিয়েছি।

চট্টগ্রাম থেকে বদলি আদেশ হওয়ার পরপরই আমি কমিশনকে জানিয়েছিলাম, প্রভাবশালী মহল আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে থাকাকালে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণের সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনায় ১৫৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন, যেখানে অ্যাডমিন ক্যাডার ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও ছিলেন। পেট্রোবাংলার প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের (কেজিডিসিএল) অনিয়মের বিরুদ্ধে ১০টি মামলার সুপারিশ করেছি এবং সাবেক এক এমপির ছেলেসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে আসামি করে একটি মামলাও করেছি। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে অনেকের মুখোশ উন্মোচন করেছি। পাঁচটি মামলার সুপারিশ করেছি। এসব বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে আমি প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছি। আমার বাসায় গিয়ে একটি মহল হুমকি দিয়েছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল। এর ১৬ দিনের মধ্যেই আমার অপসারণ আদেশ হয়েছে।

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মাইদুল ইসলাম বলেন, দুদকের চাকরি বিধিতে ৫৪(২) রাখা হয়েছে, সেটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন বিষয়। এটি টিকবে কী টিকবে না, সেটি এখন বলা যাচ্ছে না। এটি না-ও টিকতে পারে। তিনি বলেন, এই বিধিটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। কারণ যার বিরুদ্ধে তাকে কিছু জানানো হলো না। বিনা বিচারে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলো। এটি হচ্ছে চরম সাজা দেওয়া। সেজন্য এটি ঠিক হয়নি। এটা হয়েছে ক্রসফায়ারের মতো ঘটনা। তিনি আরও বলেন, দুদকের ভেতরে অনেক ক্ষোভ আছে, অনেক দিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এটি। এ কারণে দুদক কর্মকর্তা ক্ষুব্ধ।

মাইদুল ইসলাম আরও বলেন, দুদক থেকে কাকে যেন বাঁচানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই নির্দেশ শরীফ উদ্দিন মানেননি। সেটি জানছি না। জানা গেছে, চাকরি হারানোর আগে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে। তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের খুলশী থানায় জিডি করেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাসার নিচতলায় একজন অতিথির সঙ্গে আলাপকালে দারোয়ানের অনুমতি ছাড়াই হুট করে আইয়ুব খান চৌধুরীসহ এলজিইডির লোক পরিচয়ে আরেকজন ঢুকে পড়েন। এ সময় আইয়ুব খান জানতে চান, আমি কেন তার বিরুদ্ধে নিউজ করিয়েছি, আমার কারণে তার জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, আমি কীভাবে চাকরি করি, তিনি দেখে নেবেন। আমি চট্টগ্রামে কর্মরত থাকাকালীন অনেকের জীবন নষ্ট করে দিয়েছি, দুদক দিয়ে আমার জীবন নষ্ট করে দেবেন। একপর্যায়ে তারা ফোন করে বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসেন। তখন আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকিও দেন। আমি গেটে তালা দিয়ে তাদের বের হয়ে যেতে বলি। পরে আইয়ুব খান চৌধুরী শান্ত হলে আমি জিজ্ঞাসা করি, কেন তিনি এই ধরনের অশোভন আচরণ করলেন? তখন আইয়ুব খান সরি বলেন। কিন্তু তার গতিবিধি ও উদ্দেশ্যে সন্দেহজনক। আমার যে কোনো ক্ষতি করতে পারেন তারা।’ এ বিষয়ে জানতে আইয়ুব খানকে কয়েক দফায় ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি কেউ।

দুদক কর্মকর্তারা বলেন, ডিএডি শরীফ উদ্দিন সৎ ও সাহসী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত থাকা অবস্থায় কক্সবাজারে ৭২টি প্রকল্পে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মামলা করেন। এতে তিনি অনেকের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন। এর পর গত বছরের ১৬ জুন তাকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। আর এখন তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।

তারা আরও বলেন, যদি শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তবে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে তার শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। এভাবে বিদায় করাটা অমানবিক। এতে দুদকের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলতে পারে।

জানা গেছে, ডিএডি শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তিনটি বিভাগীয় মামলা চলছে। এসব মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। একটি মামলার অভিযোগ হচ্ছে- তিনি বদলির পর তার হাতে থাকা দুর্নীতির অভিযোগ ও মামলার নথি অন্য কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেননি। আরেকটি মামলার অভিযোগ হচ্ছে, তিনি দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান পর্যায়ে আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেন। ব্যাংক হিসাব জব্দের আগে কমিশনের অনুমোদন নেননি। আর সর্বশেষ অভিযোগ হচ্ছে তিনি একটি দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তকালে ৮৬ লাখ টাকা জব্দ করেন। যা তার অফিসের আলমারিতে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের সংক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা বলেছেন, শরীফ উদ্দিনকে বদলি করা হলে তিনি তার হাতে থাকা চলমান অনুসন্ধান ও তদন্তাধীন নথিগুলো হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের পরও নথিগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বুঝে নেননি। নিয়ম অনুযায়ী মামলার তদন্তকালে কোনো কিছু জব্দ করা হলে সেটি কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় আদালতে জমা দেবেন। এর আগে এগুলো তার হেফাজতে থাকবে। কিন্তু দুদক কর্মকর্তারা জব্দকৃত জিনিস ব্যাংকে জমা রাখেন। তিনি সেটি ব্যাংকে রাখেননি।

মানববন্ধনে উপস্থিত দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল আমাদের এক সহকর্মীকে ৫৪(২) ধারায় একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ইনভেস্টিগেশন-ইনকোয়ারি করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কাজ করতে গিয়ে আমাদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আশা করি কমিশন যৌক্তিকতাসহকারে আমাদের সমস্যাগুলো দেখবেন। আমরা যেসব সমস্যা ফেস করি এ বিষয়গুলো সচিব স্যারের কাছে জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, খুব দ্রুত আমাদের বিষয়গুলো সমাধান করবেন। তিনি আরো বলেন, একটি ক্রিমিনাল প্রসিডিউর বেইজড অন ইনভিজিলেশন অ্যান্ড ইনকোয়ারি চাইলেই তাড়াহুড়া করে দেওয়া যাবে না। আমরা চাইছি এই জিনিসগুলো যেন তারা বুঝে সমাধান দেন। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধাসহ অন্যান্য অন্যায্য বিষয়গুলো ঘটে, আমাদের নিরাপত্তা দিক। মানববন্ধন শেষে দুদক সচিব বরাবর স্মারকলিপিও দেন কর্মকর্তারা।

এতে বলা হয়, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে দুদক কর্মচারী বিধিমালার যে ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে, তার কার্যকারিতার বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় একজন কর্মকর্তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনোরূপ সুযোগ না দিয়ে এবং কোনো রূপ অপরাধ করেছে কিনা সে বিষয়টি তাকে অবহিত না করে ৫৪(২) বিধি প্রয়োগের মাধ্যমে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়, যা অসাংবিধানিক, বেআইনি ও সাধারণ আইনের মানবাধিকার পরিপন্থী।

৫৪(২) নং বিধিতে বলা হয়েছে, এই বিধিমালায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনও কারণ না দর্শাইয়া কোনও কর্মচারীকে ৯০ দিনের নোটিশ প্রদান করিয়া অথবা ৯০ দিনের বেতন পরিশোধ করিয়া তাহাকে চাকরি হইতে অপসারণ করিতে পারিবে। অন্যদিকে সংবিধানের ১৩৫(২) নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা আছে- অনুরূপ পদে (প্রজাতন্ত্রের অসামরিক পদে) নিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার সম্পর্কে প্রস্তাবিত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগদান না করা পর্যন্ত তাকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনতি করা যাইবে না।

এতে আরও বলা হয়, শরীফ উদ্দিন দীর্ঘদিন দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তিনি দক্ষ ও পরিশ্রমী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত থাকাকালীন ৫২টি মামলা করেন। উপসহকারী পরিচালক শরীফ নিজেই তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ১৫টি মামলার তদন্ত শেষ করে বিচারের জন্য আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন। তিনি কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণের কোটি কোটি আত্মসাতের ঘটনা উৎঘাটনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করেছেন। শরীফ উদ্দিনের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের কারণে সংক্ষুব্ধ পক্ষসমূহ বিভিন্ন সময়ে তাকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এভাবে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাকে ৫৪ (২) ধারায় আকস্মিক চাকরি থেকে অপসারণ প্রকারন্তরে দুদক দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা করার শামিল।

দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, শুধু শরীফ উদ্দিন নয়। দুদকের আর ৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে। তাদের মধ্যে উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী, জাহিদ হোসেন ও মোশাররফ হোসেন মৃধা আছে।

এদিকে, দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতের কারণ প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মঞ্জুর-ই-আলমের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন শরীফ উদ্দিন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের অবৈধ উপায়ে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের রাসেলসহ ৬ জন, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহাম্মদ ইসমাইল বালিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

অবৈধভাবে গ্যাসসংযোগ প্রদানের অভিযোগে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সারওয়ার হোসেন, সাবেক ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সার্ভেয়ার দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন শরীফ উদ্দিন। এই মামলায় সারওয়ার, মজিবুর ও দিদারুলকে গ্রেপ্তার করে দুদক।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়েসংলগ্ন কলাতলী বাইপাস রোড এলাকায় পিবিআই অফিস তৈরির জন্য এক একর জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতি, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে খালাসি পদে ৮৬৩ জনকে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ কোটি ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপকসহ ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন শরীফ উদ্দিন।