গত নয় মাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। সম্প্রতি এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
‘করোনা পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একাডেমিক চাপের প্রভাব ও তাদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক ওই জরিপ করেছে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা আঁচল ফাউন্ডেশন।
শনিবার সকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক আব্দুল ওহাব জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের জীবনে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে, তা হল পড়াশোনার অতিমাত্রায় চাপের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা। ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা চাপের কারণে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
আত্মহত্যার ভাবনা নিয়েও অশনি সংকেত দিয়েছে জরিপের ফলাফল। করোনা পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যার করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪.১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
আরও বলা হয়, করোনা পরবর্তী জীবনে বেড়েছে ভয় ও আশঙ্কা। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ শিক্ষার্থীদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে। ৮০.৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে এর প্রভাব পড়েছে।
দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী একাডেমিক চাপের সম্মুখীন হয়েছেন বলেও জরিপে উল্লেখ করা হয়।
আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরণের মানসিক সমস্যা এবং আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। তাদের সমস্যাগুলোর অনেকগুলোরই চাইলে সমাধান করা যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (অবসরপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ এবং বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি ড. মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, করোনার সময়ে ও করোনা পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে বলে অনেক গবেষণায় ও খবরে উঠে এসেছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের নিশ্চিত নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের কাজ সম্পাদন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ এ সংক্রান্ত জাতীয় নীতি ও তার শতভাগ প্রয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।