ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কারাগারে থাকা মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল গ্রেপ্তারের ১৯ দিনের মাথায় জামিন পেয়েছেন।
রোববার দুপুর দেড়টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক মোতাহারাত আখতার ভুইয়া শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
হৃদয় মন্ডলের জামিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেছেন তার আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। সরকার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন অ্যাডভোকেট পল্টু।
হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ দ্য বিজনেস পোস্ট‘কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ২০ মার্চ স্কুলে বিজ্ঞান বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন। সেখানে ধর্ম ও বিজ্ঞান নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন হৃদয় মন্ডল। পরবর্তীতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওই ক্লাসের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ক্লাস শেষে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করে।
পরে গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করা ও ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন একই স্কুলের অফিস সহকারী মো. আসাদ মিয়া। অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ২৮ মার্চ ও ৪ এপ্রিল তার জামিন আবেদন করা হলেও আদালত নাকচ করেন। এর আগে গত ২৩ ও ২৮ মার্চ আদালতে হৃদয় মন্ডলের জামিন চাওয়া হয়েছিল। সে সময় আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
হৃদয় মণ্ডল প্রায় ২১ বছর ধরে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয় পড়ান। পরিবার নিয়ে স্কুলের পাশে একটি কোয়ার্টারে থাকেন।
সম্প্রতি তার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৮ বিশিষ্টজন। শাহবাগসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালিত হয়, এছাড়া অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে।