মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ তোলা শিক্ষার্থী হুমাইরা ইসলাম ছোয়াসহ তার পরিবারের সদস্যদের সচিবালয়ে ডেকে পুরো ঘটনা শুনেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। কথা বলেছেন অভিযুক্ত পরিদর্শক ডা. নাফিসা ইসলামের সঙ্গে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। এদিকে, ওই দিন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার সময় কোনো শিক্ষার্থীর ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে যান হুমাইরাসহ তার পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত ওই পরিদর্শক ডা. নাফিসা ইসলামকেও ডেকে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সেই দিনের পুরো ঘটনা শুনে শিগগিরই এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে হুমাইরার বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলা বিষয়ে সেই দিনের পুরো ঘটনা আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চেয়েছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী পুরো ঘটনা শুনে শিগগিরই সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
এদিকে আজ দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রদিবেদন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে অধিদপ্তরে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় অধিকতর তদন্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর দু’দিন পর এক নারী পরীক্ষার্থী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে এক অভিযোগ জানান। তিনি অভিযোগ করেন যে, রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল ভবনের অষ্টম তলায় ৮২৩ নম্বর কক্ষে তার পরীক্ষার সিট ছিল। পরীক্ষায় অসৎ উপায় অবলম্বনের সন্দেহে একজন পর্যবেক্ষক তারসহ তিন শিক্ষার্থীর ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ওই পর্যবেক্ষক নিজের ভুল বুঝতে পারেন। এরপর তাদের নতুন করে ওএমআর শিট দেন। কিন্তু ওই সময় পরীক্ষা শেষ হওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল। তবে বারবার অনুরোধের পরও পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যবেক্ষক অতিরিক্ত সময় বাড়াননি।
পরে ওই নারী শিক্ষার্থীর এমন অভিযোগের ভিত্তিতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত পরিদর্শক ডা. নাফিসা ইসলাম জানিয়েছেন, সেই দিন খুব স্বাভাবিক পরিবেশেই পরীক্ষা হয় ৮২৩ নম্বর রুমে। ওএমআর ছেঁড়াতো দূরের কথা, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। পরীক্ষার কয়েক দিন পর ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগে অনেকটাই বিচলিত তিনি।