‘এই খারাপ একটা গান ছাড়। তোদের আজ খারাপ গানে নাচাবো। র্যাগ দে, র্যাগ দে, চিল হবে চিল’- এসব বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে দুই ঘণ্টা ধরে নাচতে বাধ্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সিনিয়র ৫ ছাত্রী।
মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রোকেয়া হলে তাকে নাচতে বাধ্য করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীর কাছে এমন অভিযোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী।
অভিযুক্তরা হলেন- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী নাসরিন জাহান খুশি, জুলি মারমা, রিনাকী চাকমা, জান্নাত নিপু ও পূজা দাস।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এক্সটেনশান ভবনের ৩ নাম্বার রুমের আপুরা আমার রুমে আসেন। তারা হাসি তামাশা করে চলে যান। এরপর পুনরায় ফিরে আসেন। তখন ভাষাভিত্তিক বিভিন্ন আলোচনা আপুদের মধ্যে চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় যথেষ্ট সম্মান ও বিনয়ের সঙ্গে জুলি আপুকে জিজেস করি, আপু, আমি ভাত খাই এটাকে আপনাদের ভাষায় কিভাবে বলে? এই কথার প্রত্যুত্তরে হঠাৎ তিনি রাগান্বিত হয়ে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তুই আমাকে জিজ্ঞেস করিস, তোর সাহস তো কম না! তোকে র্যাগ দিতে হবে। এরপর নাসরিন জাহান খুশি আপু বলে উঠলেন, শুধু ও না, এই ফ্লোরের প্রত্যেকটারে র্যাগ দিতে হবে। তখন নিপু আপুকে পাঠিয়ে অন্য রুমের আমার আরেকজন সহপাঠীকে র্যাগ দেওয়ার জন্য নিয়ে আসেন। এরপর আমাদের দু’জনের উদ্দেশে জুলি আপু বলেন, তোরা ২ মিনিট ভেবে বল, তোরা কী করবি। না হয় খারাপ কিছু ঘটবে কিন্তু। আমরা এমন কিছু দেবো যা তোরা করতে পারবি না। এরপর খুশি আপু বললেন, তোদের আজ নাচাবো। তিনি নিপু আপুকে বললেন, এই খারাপ একটা গান ছাড়। তোদের আজ খারাপ গানে নাচাবো। পেছন থেকে আপু বলছিলেন, র্যাগ দে, র্যাগ দে, চিল হবে চিল।’
প্রশাসন আবার কিসের? আমরা থাকতে দেই বলেই তোরা হলে থাকতে পারিস- সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এমনটা দাবি করেন বলেও জানান ওই ভুক্তিভোগী।
তবে র্যাগিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন সিনিয়র শিক্ষার্থী জান্নাত নিপো। তিনি বলেন, ‘র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনার কথা তো আমরা জানি না। কাল রাতে আমরা সিনিয়র জুনিয়র মিলে নেচেছিলাম। সেখানে র্যাগিংয়ের কথা কেন এলো তা তো জানি না।’
এ বিষয়ে জানতে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাধ্যক্ষ দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন।’