প্রচ্ছদ ›› বিনোদন

শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

বিনোদন ডেস্ক
১৬ মার্চ ২০২৩ ১৭:১৩:০৬ | আপডেট: ১ year আগে
শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
ঢালিউড নায়ক শাকিব খান

ঢালিউড নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক রহমত উল্লাহ। বুধবার তিনি এ অভিযোগপত্র জমা দেন।

তিনি অভিযোগপত্রে লেখেন, ‘২০১৭ সালে পূর্বচুক্তি মোতাবেক অভিনেতা শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’র কাজে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। আমি সেই চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রযোজক। তার মতো একজন বিখ্যাত অভিনেতাকে নিজের চলচ্চিত্রে অভিনয় করাতে পারব জেনে পুলকিত ছিলাম। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে ব্যবসাসফল হবে সেই বিশ্বাস ছিল। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ মুক্তি পেলে সেটি হতো অস্ট্রেলিয়ায় নির্মিত প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। আমার এবং এটার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের আশা ছিল ছবিটির হাত ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কে নতুন একটি অধ্যায় রচিত হবে।’

তিনি চলচ্চিত্রটির শুটিংয়ের সময় শাকিব কী ধরনের অসহযোগিতা ও অপেশাদার কাজ করেছিলেন তার একটি তালিকাও দেন।

তালিকার শুরুতেই তিনি বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেয়া সত্ত্বেও কোনো রকমের পূর্বঘোষণা ছাড়াই শুটিং বাতিল করে দিতেন শাকিব। তার খাদ্যাভ্যাসজনিত চাহিদা ছিল এমন যে হঠাৎ করে তিনি অদ্ভুত রকমের খাবার খেতে চাইতেন, আর তাতেই পুরো শুটিং ইউনিট নিয়োজিত হতো তার পছন্দের খাবার খুঁজে বের করার জন্য। এতে শুটিংয়ের কাজে যেমন ব্যাঘাত হতো, তেমনি চলচ্চিত্র নির্মাণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে গিয়েছিল।’

তিনি শুটিং করতে আসতেন নিজের ইচ্ছামতো সময়ে। অনেক সময় এমন হতো যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল সেট বানিয়ে আমরা তার জন্য অপেক্ষা করতাম। তিনি হয়তো শেষ বেলায় দুই-এক ঘণ্টা অভিনয় করার জন্য আসতেন। এভাবে শুটিং না করেও সকলের বেতন দিয়ে আমরা শুধু অপেক্ষা করতাম তিনি আসবেন বলেও জানান তিনি।

রহমত উল্লাহ বলেন, ‘এখন বর্ণনা দিচ্ছি তার ব্যয়বহুল যৌনাচারের। তাকে নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো, আর তা না হলে তার হোটেল কক্ষে অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হতো। এই ব্যাপারটি ছিল প্রতিদিনের রুটিন। কখনো কখনো একাধিকবার। এই সকল যৌনকর্মীদের মোটা অংকের পারিশ্রমিক আমাদেরকেই দিতে হতো।’

সর্বশেষ অভিযোগে শাকিব খান কৌশলে ছবিটির একজন নারী সহ-প্রযোজককে ধর্ষণ করেন বলে দাবি করেন রহমত উল্ল্যাহ। তিনি লেখেন, ভুক্তভোগী ওই নারীকে তিনি অত্যন্ত পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করলেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।

নির্যাতিতা তখন এই ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। (মামলা নং: NSW Police reference no: E 62494959) নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এই ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি এবং কুৎসার শিকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার নিজের এবং তার পরিবারের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওইদিন আমরা যখন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব খান সেইদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান। এরপর থেকে শাকিবের সাথে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

এ ধর্ষণের মামলায় শাকিব খান ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বলে দাবি করেন রহমত উল্ল্যাহ। তবে সামাজিক চাপে এবং আরও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান বলেও তিনি জানান। এ অভিযোগের ব্যাপারে শাকিব খান ও আশিকুর রহমানের বক্তব্য জানতে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

রহমত উল্ল্যাহ অভিযোগপত্রে দাবি করেন, শাকিব খানকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অগ্রিম পারিশ্রমিক দেয়ায় এবং অনেক ডলার বিনিয়োগ হয়ে যাওয়ায় তারা এ সকল ‘নির্যাতন’ সহ্য করেছেন। তারা চেয়েছিলেন কাজটি যেন শেষ হয়।

রহমত উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমরা এতদিন চেয়েছিলাম সমঝোতার মাধ্যমে সবকিছু মিটমাট করে ফেলতে। কিন্তু তা করেননি শাকিব খান। আমাদের ছবিটির বাজেট ছিল চার কোটি টাকা। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় ১৫ দিন শুটিংয়ে আমাদের ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, এখন এ টাকা ফেরত দিক অথবা ছবি শেষ করে দিক। কিন্তু উনি তার কিছুই করছেন না।’

শাকিব বেশ কয়েকবার তাকে শিডিউল দিয়েও শুটিং করেনি। আর ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগের প্রমাণপত্র দিতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে রহমত উল্ল্যাহ বলেন, বিষয়টি আমার আইনজীবী দেখছেন। তার কাছে সবকিছু আছে। তার সঙ্গে কথা বলে আমরা আপনাদের তা সরবরাহ করব। শাকিব যদি তাদের বাকি শুটিং না করে দেন অথবা টাকা ফেরত না দেন তবে তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।