প্রচ্ছদ ›› ফিচার

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে তারা এখন উদ্যোক্তা

আনিসুর রহমান সুমন
১৯ জুন ২০২২ ১৬:৪০:২১ | আপডেট: ২ years আগে
পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে তারা এখন উদ্যোক্তা
ছবি- বামে মো. নাজির উদ্দিন, মাঝখানে সাফিয়া রুবি, ডানে হৃদয় মহসিন

উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুর গল্পটা সহজ ছিলো না। ব্যবসা করতে সবার আগে প্রয়োজন ছিলো সাহস এবং মূলধনের। নিজের সঙ্গে নিজের প্রতিদিন একটা স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। সমস্যাগ্রস্ত মানুষকে কেউ সাময়িক সাহায্য করলেও তার পেছনে বিনিয়োগ করতে চায় না। এমনটাই বলছিলেন ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করা সাফিয়া রুবি। তিনি কাজ করছেন পাকিস্তানি ড্রেস নিয়ে। তার ফেসবুক পেইজের নাম ‘এক্সক্লুসিভ আ্যান্ড কর্ম্ফোটেবল’। সাফিয়া রুবি ব্যবসা শুরু করেন মাত্র তিন হাজার টাকা নিয়ে। এখন প্রতি মাসে তার বিক্রি হয় প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা।

ব্যবসার শুরুর কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান ও বউ হয়েও স্বামীর মোবাইলের ব্যবসায় ধসের কারণে আর্থিক দুরবস্থায় পরিবারকে সার্পোট দেয়ার জন্য নিজে কিছু করার চিন্তা থেকেই ব্যবসা শুরু করি। একজন মেয়ে হিসেবে মোটেও সহজ ছিল না বিষয়টা। তিন হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে শুরু হলেও এক্সক্লুসিভ অ্যান্ড কমফোর্টেবল এর এখনকার মূলধন প্রায় ৬ লাখ টাকা।

ফেসবুক পেইজ দইওয়ালা পেজের প্রতিষ্ঠাতা মো. নাজির উদ্দিনের গল্পটা ভিন্নরকম। চাকরি ছেড়ে তিনি যখন বিদেশ যাবার চেষ্টা করছিলেন তখন ইংরেজি শেখার প্রয়োজনে পরিচয় হয় ইংরেজি ভাষা শেখার গ্রুপ ‘সার্চ ইংলিশ’র প্রতিষ্ঠাতা রাজীব আহমেদের সাথে। মূলত তার পরামর্শেই বগুড়ার দই নিয়ে কাজ শুরু করেন নাজির। ২০১৯ সালে তার মূলধন ছিল মাত্র ৮ হাজার টাকা। সম্প্রতি তিনি কাজ শুরু করেছেন আম নিয়ে। ৮ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করা উদ্যোগ থেকে তার এখন প্রতিমাসে বিক্রি হয় প্রায় আড়াইলাখ টাকা।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে থাই-গ্লাসের ব্যবসায় ধস নামার পর পরিবারের সাতজন সদস্যকে নিয়ে দিশেহারা হৃদয় মহসিন এখন কাজ করছেন মাছ নিয়ে। মাত্র ৫০০ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করা ব্যবসাটির এখন মাসে বিক্রি প্রায় ৩ লাখ টাকার কাছাকাছি বলে বলে জানান হৃদয় মহসিন। মাছ ব্যবসার শুরুর দিকে ফেরি করে মাছ বিক্রির চেষ্টাও করেছেন এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তিনি বলেন এখন এ ব্যবসার আয় দিয়েই আমাদের সংসার চলে। 

ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠা এ তিন সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার কাছে তাদের সফলতার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, সততা ও নিষ্ঠার সাথে আমরা আমাদের ব্যবসা করার চেষ্টা করেছি। এটাই আমাদের সফলতার মূলমন্ত্র।

প্রায় শূন্য হাতে শুরু করা এ তিন উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসার প্রসারে সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা নেননি বলেও জানান তারা।