প্রচ্ছদ ›› স্বাস্থ্য

সারাহ’র দেখানো পথে বিএসএমএমইউর উপাচার্যসহ ৭ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৯:২২ | আপডেট: ২ years আগে
সারাহ’র দেখানো পথে বিএসএমএমইউর উপাচার্যসহ ৭ জন

দেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপন চিকিৎসা বেশ জটিলতা ছিল। সেই জটিল পথটি সহজ করে দিয়ে গেছেন সারাহ ইসলাম। মাত্র ২০ বছর বয়সী এ তরুণী মৃত্যুর আগে তার দেহদানের ইচ্ছার কথা জানান। দেশের ইতিহাসে প্রথম সারাহ’র মৃত্যুর পর তার দান করা দেহ থেকে কিডনি ও কর্নিয়া নিয়ে অন্য চারজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।

সারাহ ইসলামের কিডনি গ্রহণ করে সুস্থ আছেন শামীমা আক্তার। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, সচেতন সব মানুষ যেন দেহদানে এগিয়ে আসেন। শামীমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউর উপাচার্যসহ সাতজন সারাহর মতো অঙ্গদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন তারা। অনুষ্ঠানে সম্প্রতি মরণোত্তর অঙ্গদান করে আলোচনায় আসা তরুণী সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা, সারাহর কিডনি নেওয়া শামীমা আক্তার, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল, কিডনি প্রতিস্থাপন টিমের সব সদস্য মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকার করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ। এ সময় তথ্যমন্ত্রীকে দেহদানের আহ্বান জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি ডায়বেটিসের রোগী। এ বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তারপর সিদ্ধান্ত জানাব। ডায়বেটিসের রোগী, শরীরের কোনো অংশ ভালো আছে কি না তা দেখতে হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। উপাচার্য বলেন, তিনিসহ মোট সাতজন সারাহর মতো অঙ্গদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ সাতজন অঙ্গদানের জন্য তৈরি করা কার্ডে স্বাক্ষর করেছেন।

১৮ জানুয়ারি ‘মস্তিষ্ক মৃত’(ব্রেন ডেথ) ঘোষিত সারাহ ইসলামের দুটি কিডনি এবং দুটি কর্নিয়া চারজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। শামীমা আক্তার ছিলেন কিডনি গ্রহীতাদের একজন। ওই প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত ছিলেন, তাদের আজ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা।

চিকিৎসকরা বলছেন, ১৯৮২ সালে জীবিতদের কাছ থেকে কিডনিসহ আরও ৮ ধরনের অঙ্গ সংগ্রহে বৈধতা দেওয়া হয়। কিন্তু ব্রেন ডেথ (মস্তিষ্ক মৃত) রোগীর কিডনি দানে সীমাবদ্ধতা ছিল। ২০১৮ সালে সেই জটিলতা কাটিয়ে মরণোত্তর সংযোজন আইনে কিডনি, লিভার, চোখের কর্নিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গদানে নিকটাত্মীয়ের সম্মতিতে বৈধতা দেওয়া হয়। তারপরও সামাজিক ও ধর্মীয় বাধায় তা আটকে থাকে। গত ১৮ জানুয়ারি সেই বাধা কাটে ২০ বছরের তরুণী সারাহ ইসলামের হাত ধরে।