দেশে আবারও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ছে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সর্তক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে নতুন করে আরও ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশার কামড় থেকে মুক্ত থাকতে হবে। আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসা-বাড়ির ছাদ, আঙিনায় যেন পানি জমে না থাকে সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।’
টিকাদান কার্যক্রম প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর সাড়ে দুই কোটি শিশুকে টিকা দিয়ে থাকি, সবমিলিয়ে প্রায় ১০টিরও বেশি অসুখের টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রোগ্রামের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার সেন্টার করে থাকি। এছাড়াও আমরা ১৫ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের টিকা দিয়ে থাকি। তাদেরও ১০ রকমের রোগের টিকা দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ টিকার প্রতি আগ্রহী, তারা খুবই আনন্দের সঙ্গে টিকা নেয়। আমাদের মায়েরা শিশুদের টিকা দিতে আগ্রহী। তারাই আমাদের টিকাদানে সফলতার পেছনের বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছাও বড় কারণ। এই কার্যক্রমে বিরাট একটা লজিস্টিক সাপোর্ট লাগে, যা সরকার দেয়। টিকাদানের সময় অন্যান্য কাজকর্মও আমরা করে যাচ্ছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনায় বিশ্বে ৭০ লাখ মানুষ মারা গেছে, ৭০ কোটি লোক আক্রান্ত হয়েছে। আমরা ৩৬ কোটি টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। টিকা দেওয়ার কারণেই আমাদের দেশে মৃত্যুহার কম ছিল।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭০০টি স্থায়ী ও এক লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রের মাধ্যমে শিশু ও নারীদের সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে জীবন রক্ষাকারী টিকা দেওয়া হয়ে থাকে।
এছাড়া আরও কয়েকটি টিকা অচিরেই নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে যুক্ত হতে চলেছে। যার মধ্যে এইচপিডি টিকা অন্যতম। যার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের নারীদের জরায়ুমুখের ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে সুরক্ষা দিতে পারব।
২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯ জন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে ৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের আটজন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একজন ঢাকার বাইরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৬৫ জন ঢাকার মধ্যে এবং আটজন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৯৬ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৪৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে এ হাজার পাঁচজন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ৫২৩ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ৪৮২ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ জন।