প্রচ্ছদ ›› লাইফস্টাইল

ইফতারে যে কারণে রাখবেন খেজুর

টিবিপি ডেস্ক
০১ এপ্রিল ২০২২ ১৫:২৭:২২ | আপডেট: ২ years আগে
ইফতারে যে কারণে রাখবেন খেজুর

সারাদিন রোজা রেখে সাধারণত খেজুর দিয়েই ইফতার শুরু করার অভ্যাস অধিকাংশ রোজাদারের। ইফতারে খেজুর অত্যন্ত উপযোগী উপকরণ। এটি শর্করা ও পুষ্টি উপাদানের উৎস হিসেবে কাজ করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা রাসুল (সা.) এর অভ্যাস ছিল। সে হিসেবেই মুসলিমরা এটি করে থাকেন। 

হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) কয়েকটি ভেজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ভেজা খেজুর না থাকলে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ভেজা কিংবা শুকনো খেজুর কোনোটাই না পেলে পানিই হত তার ইফতার।’ (তিরমিজি; রোজা অধ্যায় : ৬৩২)

সালমান ইবনে আমির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল্ল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয় পানি পবিত্র।’

রাসুল (সা.) সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে পছন্দ করতেন। ইফতারে দেরি করা তিনি পছন্দ করতেন না।

সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যতদিন মানুষ অনতিবিলম্বে ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮২১; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮৩৮)।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, খেজুর অনেক উপকারী একটি ফল। বিশেষ করে রোজাদারের জন্য খেজুর অনন্য এক টনিক।

সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে তাই শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা দেখা দেয়, যা ইতফারের সময় পূরণ করতে হয়। আর খেজুর সেটি দ্রুত পূরণে সাহায্য করে।

তবে শুধু রমজান মাসে নয়, বছরজুড়েই নিয়মিত খেজুর খেতে বলছেন পুষ্টিবিদরা।

চলুন জেনে নিই খেজুরের আরও ১০ উপকার-

১. রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন এমন মানুষকে প্রতিদিনই কয়েকটি করে খেজুর খাওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।

২. খেজুরে রয়েছে প্রচুর আয়রন। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস দেহের আয়রনের অভাব পূরণ করে এবং রক্তস্বল্পতার হাত থেকে বাঁচায়।

৩. অনেকেরই খাওয়ার রুচি থাকে না। খেজুর রুচিবর্ধক একটি ফল। নিয়মিত খেজুর খেলে রুচি ফিরে আসবে নিশ্চিত।

৪. রমজানে সারা দিন রোজা রাখার ফলে খালি পেটে গ্যাস জমে। আর ইফতারে সবার আগে খেজুর চিবিয়ে খেলেই পেটের গ্যাস দূর হয়ে যায়।

৫. ঠাণ্ডায় বা বৃষ্টিতে ভিজে অনেকেই সর্দি-কফ বা শ্লেষ্মাজনিত সমস্যায় ভোগেন। সারা দিন রোজা রাখার কারণে দিনেরবেলায় এসব বিষয়ে দেহের পরিচর্যা করা যায় না। তাই ইফতারে খেজুরের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে তা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। খেজুর কফ দূর করে, শুষ্ক কাশি এবং এজমায় উপকারী।

৬. পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, শক্ত খেজুর পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। তাজা খেজুর নরম ও মাংসল, যা সহজেই হজম হয়।

৭. হৃদযন্ত্রের জন্য বেশ উপকারী খেজুর। খাবার তালিকায় প্রতিদিন খেজুর রাখলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞান বলেন, সারারাত খেজুর পানিতে ভিজিয়ে সকালে পিষে খাওয়ার অভ্যাস হার্টের রোগীর সুস্থতায় কাজ করে।

৮. খেজুরে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান। প্রতিদিন শরীরের ক্ষয়রোধ করতে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খেজুরে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।

৯. ওজন কমাতে খেজুরের জুড়ি নেই। কারণ খেজুরে আছে ডায়েটরই ফাইবার, যা কলেস্টোরেল থেকে মুক্তি দেয়। ফলে ওজনকে না বাড়িয়ে সঠিক ও সুন্দর রাখতে খেজুর বেশ উপযোগী।

১০. প্রতিদিন খেজুর খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। পক্ষাঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য খেজুর খুবই উপকারী।