অফিসের ডেডলাইনের চাপ হোক বা সাংসারিক ঝুটঝামেলা, ব্যক্তিগত জীবনে টেনশনের রয়েছে হাজারো কারণ। আর এই টেনশনের হাত ধরেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হৃদরোগ ধেয়ে আসে। তাই টেনশন দূর করার পরামর্শ প্রায়ই দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বলা যত সহজ, টেনশন দূর করা ততটাই দুরূহ।
নিজের মনের জোর তো চাই-ই, সঙ্গে দরকার কিছু পদক্ষেপ নেওয়াও। একটু সচেতন হলে এবং আবেগের পাশাপাশি একটু যুক্তি মেনে চললে টেনশন কাটানো খুব কঠিন কিছু নয়৷
কিন্তু কীভাবে সম্ভব? মনোবিদদের মতে, অতিরিক্ত চাহিদাই যত অশান্তির কারণ৷ সে সম্পর্কে হোক কি কাজে৷ তাই ক্ষমতা অনুযায়ী তাকে বাঁধা প্রয়োজন। কিন্তু তা বাঁধার সঙ্গে জেনে নিতে হবে আরও কী কী উপায়ে কব্জা করা যেতে পারে টেনশন!
টেনশনের সময় সাহস ও শক্তি দিতে পারবেন, এমন কারও সঙ্গ পাওয়ার চেষ্টা করুন।
কোনও বিশেষ কিছু নিয়ে টেনশন হলে অস্থির হবেন না৷ যে কোনও সমস্যার গুরুত্বই সময়ের সঙ্গে কমে৷ কাজেই এই ঘটনার গুরুত্বও কমবে৷
নিজের কাজ করে যান৷ ফলাফল সব সময় আশানুরূপ নাও হতে পারে৷ তাই তা নিয়ে ভেঙে না পড়াই ভাল।
অনেক কিছুই আমাদের হাতে নেই৷ যে কোনও মুহূর্তে যা খুশি ঘটতে পারে৷ ওলটপালট হয়ে যেতে পারে সব৷ মনকে সেভাবে তৈরি রাখুন৷
সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করুন৷ অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া, অন্যকে সম্মান করা ইত্যাদি অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে, নিজের চেয়ে অন্যকে বেশি সময় দিলে ব্যক্তিগত টেনশন কম থাকবে৷
কী পাননি তার হিসেব না করে কী পেয়েছেন তার হিসেব করুন৷
আদর্শ হিসেবে সামনে কাউকে পান কি না দেখুন৷ যাঁর জীবনযাপন, লড়াই করার ক্ষমতা, বিপদে অবিচল থাকার শক্তি সাহস জোগাবে৷ সে ক্ষেত্রেও টেনশন কমানোর দাওয়াই হতে পারে তাঁর সঙ্গ।
কেউ কিছু বলেছে শুনলেই ব্যাকুল হবেন না৷ ভেবে দেখুন, তিনি কি আপনার শুভাকাঙ্খী? গুরুত্বপূর্ণ কেউ? তেমন কেউ হলে ভেবে দেখুন কেন এমন হল৷ নিজের দোষ খুঁজে তা শোধরানোর মতো হলে শুধরে নিন৷
জীবনকে একটু সহজ ভাবে নিতে শিখলে টেনশন কমবে সহজই।
কিছুটা দূরত্ব রেখে মিশলে অশান্তি কম হয়৷ সম্ভব না হলে যে সম্পর্ক থেকে বা যে কারণে অশান্তি হচ্ছে সেই বিষয় এড়িয়ে চলুন৷
ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে টেনশন তৈরি হলে তাকে পুরনো হতে দেবেন না৷ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করুন৷
ঈর্ষা জাগলে সাবধান৷ টেনশনের এ এক বড় কারণ৷ ভেবে দেখুন ঈর্ষার কারণ কিন্তু সেই চাহিদা৷ আর এক জন কিছু পেয়েছে যা আপনি পাননি৷ কাজেই কী পাননি সেই হিসেবে না গিয়ে কী পেয়েছেন তার তালিকা বানান। এবং আরও কী কী পেতে চলেছেন তার ছবি সামনে রেখে এগিয়ে চলুন৷
কোনও ভাবনা কষ্ট দিলে তাকে কাটাছেঁড়া করুন৷ কষ্টের ব্যাপার হলে কষ্ট হবে৷ তা মেনেও নিতে হবে। যা মানতেই হবে, তার জন্য আগে থেকে ভুল ভেবে কষ্ট পেয়ে কী লাভ?
প্যারানয়েড ব্যক্তিত্বের মানুষ প্রচুর আছে সংসারে৷ যাঁরা অন্যদের ব্যঙ্গ–বিদ্রূপ করে আনন্দ পান৷ তেমন মানুষকে এড়িয়ে চলুন বা উপেক্ষা করতে শিখুন।
রাগ পুষে রাখার অভ্যাস ছাড়তে হবে৷ কারণ এ ক্ষেত্রেও ক্ষতিটা শেষ পর্যন্ত আপনারই৷
পৃথিবীতে মজার জিনিস প্রচুর আছে৷ জীবনকে একটু সহজ ভাবে নিতে শিখলে রাগের বদলে মজা পাওয়ারই কথা৷
নিজের উপর বিশ্বাস হারাবেন না কোনও ভাবেই৷ কোনও মন্দ পরিস্থিতিকে বদলে দিয়ে ভাল করা যায় কি না ভাবুন, কিন্তু তা সম্ভব না হলে অকারণে সেই মন্দ পরিস্থিতির পরিণতি নিয়ে ভাববেন না। জীবন জীবনের নিয়মেই এগোবে, তাই তা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না।