প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

অক্টোবরে কমতে পারে মূল্যস্ফীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ আগস্ট ২০২২ ১৮:০৭:৫৮ | আপডেট: ৩ years আগে
অক্টোবরে কমতে পারে মূল্যস্ফীতি

বাংলাদেশ পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে জানিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিতে ইন্ধন দিচ্ছে। দাম না বাড়িয়ে বিকল্প উপায় ছিলো না। তবে আশা করছি অক্টোবরের মধ্যে মূল্যষ্ফীতি কমে আসবে।

রোববার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিকল্পনায় কোনো দুর্বলতা নেই। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ অস্বস্তিতে আছে, তবে কোনো সংকটে নেই।

তিনি আরও বলেন, অনেক অর্থনীতিবিদ দেশের অর্থনীতির অর্জন ও সম্ভাবনা দেখতে পান না। কিন্তু বিদেশি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তি ও সম্ভাবনা তুলে ধরছে।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে উন্নতমানের কয়লা মজুদ আছে। এক সময় কথা উঠেছিলো উন্নতমানের কয়লা থাকতে আমদানি করা হচ্ছে। সেটা করা হয়েছে দেশের মানুষের প্রতিক্রিয়ার কারণে। কখনও কখনও অর্থনৈতিক বিবেচনার চেয়ে রাজনৈতিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দিতে হয়। কয়লা উত্তোলনে কৃষি জমি দেবে যেতে পারে, ধ্বসে যেতে পারে এমন আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে আমাদের জমির স্বল্পতা রয়েছে, সেখানে এ ধরনের আশংকা থাকলে সেটা করা ঠিক না। অনেক দেশে কয়লার খনি এলাকা লেক হয়ে গেছে। বাংলাদেশ সেই ঝুঁকি নিতে চায়নি। এজন্য কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মূল্যষ্ফীতির চাপ থাকবে। তবে এই মূল্যস্ফীতি পুরোটাই আমদানিজনিত। এরপরও বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি, আর্থিক খাতে শৃংখলা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য সুদহার না বাড়িয়ে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ডলারের বিনিময় হার শিগগির কমে আসবে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে।

সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার বাজেট ব্যবস্থাপনায় ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। এরপরও বাজেট বাস্তবায়নে বিদেশ থেকে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আনতে হবে। দেশের ব্যাংক থেকেও এক লাখ কোটি টাকার বেশি নিতে হবে।

পরিস্থিতির উন্নতির জন্য রাজস্ব ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানি আদেশ কমছে। বড় বড় কারখানা উৎপাদন কমাতে বাধ্য হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। ক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি খরচের সমন্বিত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে সরকার প্রণোদনার ঋণ পরিশোধে কম সময় দিয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বন্ড লাইসেন্স, এইচএসকোডসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনবিআরের পলিসি ব্যবসায়ী পরিপন্থী। যতই চ্যালেঞ্জ আসুক বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে থাকবে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি ব্যারিষ্টার নিহাদ কবির বলেন, দেশে কয়লার যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। নিজস্ব যে প্রাকৃতিক সম্পদ আছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। জ্বালানিতে আমদানি নির্ভরতা এমন পর্যায়ে গেছে যে, এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনায় কিছু দুর্বলতা রয়েছে। এসব দুর্বলতা কাটিয়ে না উঠলে ভবিষ্যৎ খারাপ হবে। প্রতিযোগিতামূলক থাকা এখন প্রথম চ্যালেঞ্জ। এছাড়া নীতি নির্ধারণী পদ্ধতির কারণে ব্যবসায় নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এটাও বড় চ্যালেঞ্জ।