বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পৃষ্টপোষকতায় চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় এবং ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হলো ‘রূপসীবাংলা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারিতে আলোকচিত্র প্রদশর্নীর উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী ও অনান্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিবৃন্দরা। প্রদর্শনী শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগের এ আয়োজনের প্রশংসা করে তিনি বলেন- ’ফটো সাংবাদিকরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তা অনেকেই অনুধাবন করতে পারে না। ছবি থাকলে সংবাদ অধিক গ্রহণযোগ্য হয়। আজকে মুক্তিযুদ্ধের ছবি না থাকলে আজকের প্রজন্মরা তা জানতে পারতো না। শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, বাংলা স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন সবগুলোর ছবি ফটো সাংবাদিকরা তুলেছিলেন বলেই আজকের প্রজন্মরা তা ভালভাবে জানতে পারছে।’
পরে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির সম্মানিত সচিব জনাব সালাহ উদ্দিন আহাম্মদ। বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ বক্তব্য প্রদান করেন। ফটো সাংবাদিকদের ভুমিকা তুলে ধরেন তিনি।
এরপর সভাপতির বক্তব্যে জনাব লিয়াকত আলী লাকী বলেন– ’রুপসী বাংলা’য় অসাধারণ কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করছে ফটো সাংবাদিকরা। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। ফটো সাংবাদিকরাও শিল্পী এবং শিল্প যোদ্ধা।’ ক্যামেরা রাইফেলের ভূমিকা পালন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন ছবিগুলো এমনভাবে পাই যেন এগুলো শিল্পকর্ম হয়ে ওঠে।
বিশ্বব্যাপী ধ্বংসযুদ্ধ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন- ‘সাম্রাজ্যবাদের ধরন পাল্টে গেছে। উপনিবেশবাদ ছড়িয়ে দিতে এখন মিডিয়ার মাধ্যমে এক ধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে, সারাদেশে বিশ্বের নিগৃহীত জাতির পক্ষে তিনি যে সোচ্চার কণ্ঠ তুলেছেন- ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তা সাহসী পদক্ষেপ। যারা ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দায়িত্বটা হলো রূপসী বাংলার মন রক্ষায় ক্যামেরাকেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গণজাগরণের শিল্পযুদ্ধ করছে, যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছি আমরা। আপনারাও গণজাগরণের শিল্পযোদ্ধা”।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকারী রিয়াজ আহমেদ সুজনকে নগদ ৪০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় স্থান অধিকারকারী মোহাম্মদ পনির হোসাইনকে নগদ ৩০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট এবং তৃতীয় স্থান অধিকারকারী লুৎফর রহমানকে প্রদান করা হয় নগদ ২০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট। যৌথভাবে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং মাহবুব হোসেন খানকে বিশেষ পুরস্কার হিসেবে নগদ ৫ হাজার টাকা সাথে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এছাড়াও বরেণ্য শিল্পী সম্মাননা ২০২৩ এবং মরণোত্তর সম্মাননা ২০২৩ প্রদান করা হয়।
বরেণ্যশিল্পী সম্মাননা ২০২৩ পেয়েছেন বরেণ্যশিল্পী স্বপন সরকার এবং এ কে এম মহসীন। উভয়কেই নগদ ২০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। বরেণ্যশিল্পী এ কে এম মহসীন এর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ।
মরণোত্তর সম্মাননা ২০২৩ পেয়েছেন মুফতী মুনীর এবং মীর মহিউদ্দিন সোহান। উভয়কেই নগদ ২০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। তাদের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন মুফতী মুনীর এর স্ত্রী নাজমা পারভীন এবং মীর মহিউদ্দিন সোহানের কন্যা।
‘রূপসীবাংলা' আলোকচিত্র প্রদর্শনী ১৬ - ২৫ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাতীয় চিত্রশালার ২নং গ্যালারিতে প্রদর্শনী চলবে।