প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সমুদ্রকে নিরাপদ রাখতে কাজ করছে সরকার’

বাসস
০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৫৭:৩৬ | আপডেট: ২ years আগে
‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সমুদ্রকে নিরাপদ রাখতে কাজ করছে সরকার’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | পুরনো ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সামুদ্রিক সম্পদ ও সামুদ্রিক বাণিজ্য রক্ষায় সমুদ্রে নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার সামুদ্রিক সম্পদের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে সামুদ্রিক খাতের উন্নয়নে ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু, সমৃদ্ধ অর্থনীতি কেবল তখনই সম্ভব, যখন আমরা সমুদ্রে একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারব। সে লক্ষে আমরা আমাদের সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় পরিকল্পিত সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুণগত উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে ‘ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ শিরোনামে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত কক্সবাজারের ইনানীতে বীচে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ-২০২২-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, সৌদি আরব, ভারত, চীন, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস এবং স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সংস্থার অংশগ্রহণে চার দিনব্যাপী আইএফআর শুরু হয়েছে। 

আরও পড়ুন-  দেশের প্রথম ‘আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউর’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আইএফআরের আয়োজন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবাধ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিশ্চিত করার জন্য নিরাপদ সমুদ্র অপরিহার্য কারণ, বর্তমানে বিশ্বের ৯০ শতাংশ বাণিজ্য সমুদ্রপথ দিয়ে হয়।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক সীমানার মাধ্যমে আমাদের সকল দেশ বিভক্ত হলেও বন্ধুত্বের সেতু বন্ধনে সমুদ্র উপকূলীয় সকল দেশের সঙ্গে আমরা একই সূত্রে গাঁথা। ‘ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ এই উপজীব্যকে ধারণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত ‘আইএফআর-২০২২’ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে। যা সকল সামুদ্রিক দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিতে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৌবাহিনীর প্রথা অনুযায়ী ‘শিপস বেল’ বাজিয়ে ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আগত বিভিন্ন দেশের নৌসদস্যদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড্স কর্তৃক সমুদ্রে একটি বিশেষ মহড়া প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে দৃষ্টিনন্দন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়। জাতির পিতার স্মৃতি অবলম্বনে নির্মিত চিত্রপ্রদর্শনী ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ অবলোকন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে আইএফআর ২০২২ উপলক্ষে নির্মিত অত্যাধুনিক কজওয়ে ও জেটি উদ্বোধন করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা জেটিতে অবস্থানকরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ আগত বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর নৌবাহিনীর জাহাজ, উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টার এবং বিশেষায়িত বোটের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ ফ্লিট রিভিউ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় জাহাজগুলো ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

আইএফআর ২০২২ উপলক্ষে ফ্লিট রিভিউর পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী বিদেশি নৌপ্রধান ও উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরা মেরিটাইম সেমিনার ও দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

আইএফআর ২০২২-এ অংশগ্রহণকারী ২৮টি দেশ হলো- বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিসর, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মায়ানমার, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ওমান, প্যালেস্টাইন, সুদান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশের নৌবাহিনী প্রধান ও উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।