দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকাপাচারের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ তিনজনের নামে হওয়া মামলাটির তদন্তে ত্রুটি রয়েছে বলে দাবি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন করেছে তারা।
বৃহস্পতিবার দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহম্মদ আলী সালাম ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে ওই মামলার অধিকতর তদন্তের আবেদন জমা দিয়েছেন। আদালতের বিচারক সৈয়দ কামাল হোসেন শুনানি শেষে আগামী ১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে দিন ঠিক করেছেন।
দুদকের প্রসিকিউটর সালাম বলেন, ‘মামলায় দুদক যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তাতে কিছু ত্রুটি রয়েছে। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন। তাই আমরা দুদকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মামলাটিতে অধিকতর তদন্তের আবেদন করেছি।’
মামলাটিতে ফালু পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করেন আদালত। এসময় ফালু পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২৪ মার্চ ফালুকে পলাতক দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পত্রিকায় প্রজ্ঞাপন প্রকাশের নির্দেশ দিন আদালত। মামলাটি বর্তমানে চার্জগঠনের পর্যায়ে রয়েছে।
মামলার অপর দুই আসামি আরএকে সিরামিকস লিমিটেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ কে ইকরামুজ্জামান এবং স্টার সিরামিকস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান। তারা দুজনই জামিনে রয়েছেন।
২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় বলা হয়, মোসাদ্দেক আলী ফালু, একরামুজ্জামান ও আনোয়ারুজ্জামান ২০১০ সালে দুবাইয়ে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও থ্রি-স্টার লিমিটেড ডেভেলপমেন্ট ইউএই নামে অফশোর কোম্পানি খোলেন। এরপর তারা বাংলাদেশে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচার করেন। দুবাইয়ে ওই অর্থ উপার্জনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি।
২০১৯ সালের ১৩ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় ফালু ও অন্য দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুবাইয়ে পাচার করা ওই অর্থ উপার্জনের কোনো উৎস তারা (ফালু ও তার দুই সঙ্গী) দেখাতে পারেননি। ওই অর্থ কীভাবে উপার্জন করা হয়েছে তার কোনো তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে কখনো জানাননি বা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে মোসাদ্দেক আলী ফালু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।