যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দঘন পরিবেশে ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ১৬ ডিসেম্বর দূতালয় প্রাঙ্গণে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে। দিনব্যাপী কর্মসূচীর প্রথম পর্বে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং আলোচনা সভা। বিকালে অনুষ্ঠিত হয় কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্য সংবর্ধনা। সন্ধ্যার পরে ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সবশেষে আগত অতিথিবৃন্দের জন্য নৈশভোজ।
আলোচনা পর্বে রাষ্ট্রদূত ড. মোঃ মনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে অর্জিত মহান বিজয় বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও অবিসংবাদি নেতা হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতির পিতার নির্দেশিত পররাষ্ট্রনীতি অনুসারে বাংলাদেশ সকলের সাথে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখছে। তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান বাংলাদেশের তিনটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য যথা জনকল্যাণমূলক গণতন্ত্র, চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এবং জাতি গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সঠিক পথে এগোচ্ছে যা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করবে।
বিকেলে ইয়াঙ্গুনস্থ কূটনৈতিক মিশনের প্রধানগণ, অন্যান্য কূটনীতিকবৃন্দ, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা, মিয়ানমারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং ইয়াঙ্গুনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আর্ট অ্যান্ড কালচারের শিক্ষার্থীরা এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের শিশুরা দেশাত্মবোধক বাংলা গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে। দূতাবাস প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন পর্যায় তুলে ধরে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। আমন্ত্রিত বিশিষ্ট এ অতিথিদের জন্য বাংলাদেশি খাবারের আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আগত অতিথিদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যগণ, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের পরিবারের সদস্যসহ উপস্থিত ছিলেন।