জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় এক প্রকল্পের জন্য একটি স্টিলের চেয়ারের দাম ৪৩ হাজার ৪৮১ টাকা ও একটি সোফার দাম এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছে গণপূর্ত বিভাগ।
একই সাথে সংসদের ভবনের দক্ষিণ প্লাজার টেম্পার নষ্ট হওয়ায় ইট (পেভমেন্ট ব্রিক) পরিবর্তনসহ আধুনিকায়নে প্রতি বর্গফুট ৫৩৮ টাকা এবং গানম্যান, ড্রাইভার, নিরাপত্তাকর্মী, এপিএস বা পিওদের জন্য তিনটি ওয়েটিং জোন নির্মাণে প্রতি বর্গফুট ১৯৬৯ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি স্টুডিও নির্মাণ এবং মিনিস্টার হোস্টেল ব্লকের আধুনিকায়নে প্রতি বর্গফুটে ২ হাজার ৩২৬ টাকা চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মন্ত্রী হোস্টেল এলাকায় পুলিশ ব্যারাক পুনঃনির্মাণে প্রতি বর্গফুট এক হাজার ৮৬৪ টাকা ধরা হয়েছে।
তবে পরিকল্পনা কমিশনের অধীনে একটি সভায় এ ধরনের অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি। পরবর্তীতে সেটি সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠানো হয়।
ভৌত অবকাঠামো বিভাগের উপ-প্রধান বলেন, সংসদ টিভি স্টুডিও'র তৃতীয় তলার আধুনিকায়ন, সিভিল স্যানিটারি এবং মেরামতের জন্য ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু একই ধরনের প্রকল্পে কীভাবে ৫৪৭ দশমিক ৬৬ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়।
এ বিষয়ে পিডব্লিউডির সংশ্লিষ্ট এক প্রকৌশলী বলেন, বর্তমানে সংসদ টিভি স্টুডিওটি সংসদ সদস্যদের ক্লাবে রয়েছে। সংসদ কর্তৃপক্ষের সুপারিশে মিনিস্টার হোস্টেলে স্টুডিওটি স্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ স্থাপনের জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ব্যয়ের বিবরণ না দেয়ায় প্রশ্ন তুলেছে পিডব্লিউডি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সংসদ সচিবালয়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে এ ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যয় চূড়ান্ত করবে।
এদিকে, চতুর্থ গ্রেডের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিটি।
অর্থ বিভাগের উপসচিব বলেন, অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে প্রকল্পের জন্য চতুর্থ গ্রেডের একজন কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে প্রস্তাব করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে পিডব্লিউডি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এ প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ৫০ কোটি টাকারও বেশি। তাই কাউকে অতিরিক্ত দায়িত্ব না দিয়ে একজন ফুলটাইম পিডির প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা প্রকল্পের অফিস ভাড়া ও ইউটিলিটি চার্জ বাবদ অর্থের প্রস্তাবনা বাদ দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
প্রকল্পটির প্রাক্কলন ব্যয় ৯২ দশমিক ৩১৬২ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২২ সালের জুলাই শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে।