চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে বেসরকারি বিএম কন্টেইনার ডিপোতে এখনো একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সেইসঙ্গে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুনের লেলিহান শিখা। আগুনের ভয়াবহতার সঙ্গে নিহতের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। একের পর এক মিলছে লাশ। ইতোমধ্যে এ সংখ্যা ৪৩-এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের সাতজন কর্মী রয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিট।
এ দুর্ঘটনায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ কারখানার প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার জানান, ডিপো এলাকায় পানির স্বল্পতা রয়েছে। কনটেইনারের কাছাকাছি গিয়েও আগুন নেভানোও যাচ্ছে না। একের পর এক বোমার মতো কনটেইনার বিস্ফোরণ হচ্ছে। দূর থেকে পাইপ দিয়ে পানি দেয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোনাইছড়ির কেশবপুরে অবস্থিত বিএম (প্রাইভেট) কন্টেইনার ডিপুতে (সাবেক কাসেম জুট মিলস) আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের নগরীর বিভিন্ন ফায়ার স্টেশন ও সীতাকুণ্ডের কুমিরা থেকে অন্তত আটটি গাড়ি আগুন নির্বাপণের কাজ করার সময় রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন- শীতাকুণ্ডে নিহত বেড়ে ৪৯
এতে সেখানে কর্মরত কয়েকশ শ্রমিক, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা আহত হন। ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরপরই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং একের পর এক অন্যান্য কন্টেইনার বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, কন্টেইনারগুলোতে ক্যামিকেল ভর্তি ছিল। যার কারণে আগুন লাগার পর সেগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আহতদের নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসকারি হাসপাতালে ছুটে যায়।
এব্যাপারে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের পর পরই আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। বিস্ফোরণে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও সময় লাগবে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ১০টায় লাগা আগুন ভোর ৬টা পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রথমে ৮টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কাজ করলেও পরে ২৪টি ইউনিট এক যোগে কাজ করেও আগুন নিয়েন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে।
আগ্রাবাদস্থ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, 'আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ডিপোতে প্রায় দেড়শো কন্টেইনার আছে। কিন্তু রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় কন্টেইনার বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে। যে কারণে আগুনের কাছেও ঘেঁষতে পারছি না আমরা। প্রায় ১০০ গজ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।'