গণপরিবহনে গত সাড়ে ৫ বছরে প্রায় ৪ হাজার ৬০১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৫৭ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার ‘সেভ দ্য রোড’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বলা হয়েছে, ২০১৭-২০২২ সালের ৭ আগস্ট পর্যন্ত গণপরিবহন, অন্যান্য বাহন, বাসস্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশনে চার হাজার ৬০১ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে গণপরিবহনে ৩৫৭জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং বাসস্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে আরও চার হাজার ৬০১ জন। এ সময় হত্যা হয়েছেন ২৭ জন।
সেভ দ্য রোড’র মহাসচিব শান্তা ফারজানা বলেন, ৩১টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও টিভি চ্যানেল এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সক্রিয় সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এক শ্রেণির কুরুচিপূর্ণ মানুষ নারীদের পোশাক ও চলাফেরা নিয়ে যেমন কটূক্তি করে, ঠিক তেমনি নির্যাতন-নিপীড়ন করতেও এসব লোক পিছপা হয় না। এ অবস্থা রয়েছে ট্রেন, লঞ্চঘাট বা বিমান বন্দরে। এসব ঘটনায় হিজাব পরিহিত নারীরাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
মহাসচিব জানান, প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে ৯৯ জন নিপীড়নের শিকার হন। এসব ঘটনার নেপথ্য কারণ পুরুষদের হীন মানসিকতা, ধর্মীয় অনুশাসন না মানা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতিই এর জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন- চলন্ত বাসে ডাকাতি, লুটপাট শেষে নারী যাত্রীকে ধর্ষণ
গণপরিবহন, বাসস্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশনসহ বিভিন্ন পথে নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ ও খুন বন্ধের লক্ষ্যে ‘সেভ দ্য রোড’ সংশ্লিষ্টদের প্রতি ৩টি সুপারিশ করেছে। সেগুলো-
ক. রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করতে ‘নারীর প্রতি সম্মান’ শীর্ষক সচেতনতা তৈরি করা, সেখানে ধর্মীয় অনুশাসন, নীতি-আদর্শ-সভ্যতার আলোকে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতে হবে এবং তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার এবং প্রথম শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করতে হবে।
খ. মালিক, চালক, হেলপার, সুপারভাইজারসহ সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই যাত্রীদের প্রতি আচরণ প্রশিক্ষণ এবং অসদাচরণ করলে শাস্তির ঘোষণা দিতে হবে।
গ. প্রতি ৫ কিলোমিটার অন্তর পুলিশ বুথ স্থাপন, সব সড়ক-মহাসড়ক ও সেতুকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে।