প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

চুরি করা স্বর্ণের স্বর্গ তাঁতী বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:৪২:০০ | আপডেট: ৩ years আগে
চুরি করা স্বর্ণের স্বর্গ তাঁতী বাজার

চুরি করা স্বর্ণের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে পুরান ঢাকার তাঁতী বাজার। এখানকার একটি সিন্ডিকেটের সাথে সমন্বয় করে সারাদেশের আন্তঃজেলা ডাকাত দল তাদের চুরি করা সোনা নিরাপদে বিক্রি করছে এ বাজারের বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে।

টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কুমিল্লাসহ আশেপাশের জেলাগুলো থেকে চুরি হওয়া সোনা নিয়মিত তাঁতীবাজার বাজারে বিক্রি করা হয়। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ঢাকার রাপা প্লাজা ও আশুলিয়ায় ডাকাতির দুটি পৃথক ঘটনা তদন্তে আরও বেশকিছু তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, এ ঘটনার পর সিআইডি সোনা চুরিরর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মুক্তা ধর বলেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন স্বর্ণের দোকান চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

সিআইডি’র এ কর্মকর্তা বলেন, সেপ্টেম্বরে আশুলিয়া থানার নয়ারহাট বাজারে ১৯টি স্বর্ণের দোকান লুট করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় পরে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

পরে ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে ২৪ বছর বয়সী শাহানা আক্তার নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। একইসঙ্গে তার বাড়ি থেকে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৩/৪ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরাজ মিন্টু এবং কামাল খান নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মুক্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

তাছাড়াও, আশুলিয়ার নয়ারহাটে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আনোয়ার হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন খলিফা, আব্দুর রহিম, আল মিরাজ ওরফে মিন্টু, কামাল খা এবং মো. সাগরকে গ্রেফতার করে।

তাদের গ্রেফতারের পর সিআইডি নিশ্চিত হয় যে, চুরি করা সোনা তাঁতী বাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সবুজ রায় এবং আব্দুর রহিম কিনেছিল। পরে তাদের সিআইডি হেফাজতে নেয়া হয়।

মুক্তা ধর বলেন, সিআইডি ঢাকার নয়াবাজার এলাকায় আব্দুর রহিমের একটি ভাড়া বাসা থেকে লুট করা ২০ ভরি সোনা উদ্ধার করে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডির রাপা প্লাজায় রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সে ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে সবুজ রায় এবং আবদুর রহিম।

তিনি বলেন, নয়াবাজার এলাকার সবুজ রায়ের বাড়ি থেকে ১২ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে।

মুক্তা ধর জানান, সবুজ রায় এবং আবদুর রহিম নিশ্চিত করেছেন, খানজা করপোরেশন, রাজিয়া বুলিয়ান স্টোর, সুমন বুলিয়ান স্টোর এবং গোল্ড শপ নামের তাঁতী বাজারে এসব দোকান চুরি করা সোনা কিনেছে।

আশুলিয়া ও রাপা প্লাজায় ডাকাতি মামলার তদন্তে তাঁতী বাজারের অসাধু ব্যবসায়ী চক্র চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে বলে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।