রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান। তিনি বলেছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণেই গার্ডার দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রোববার গুলশান ডিএনসিসি নগর ভবনে এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সেবা সংস্থার চলমান উন্ননয়ন প্রকল্পের কাজে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সব প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের এ সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে। ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
উত্তরায় ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান বলেন, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে আমাদের সব বিভাগের এখানে দিনব্যাপী কর্মসূচি ছিল। এই শোকের অনুষ্ঠানে সবাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ছুটির দিনে অর্থাৎ ওই তারিখে কোনো কাজ করার কথা ছিল না। তাহলে প্রশ্ন আসে যে সেদিন উত্তরায় কাজটি কীভাবে হলো? এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, যখন কোনো কাজ করা হয় তার আগে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে একটি ম্যাথড সাবমিট করা হয়। সেখানে বলা হয়, এই সেফটি মিটারের মাধ্যমে এই পন্থায় কাজটি করা হবে। সেখানে আমাদের সার্পোট লাগে, পুলিশেরও সার্পোট লাগে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের যেসব প্রকৌশলী আছেন তাদের সার্পোট লাগে। এভাবে কাজটি সম্পন্ন হয়। কিন্তু সেদিন উত্তরায় ওই স্থানে কোনো কাজ হওয়ার কথা ছিল না। তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে ছোট একটি কাজ মনে করে নিজেরাই সেটি সরাতে যায়। যেটি তারা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে নির্দেশনা না মেনে করেছে। যে কারণে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যদি এটিকে ছোট কাজ মনে করে, আমাদের সংশ্লিষ্ট কাউকে কিছু না জানিয়ে এখানে কাজ করে দুর্ঘটনায় ঘটায় এটাকে বলতে হবে বর্বরতা।
প্রধান এই প্রকৌশলী আরও বলেন, তারা যদি নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য রেখে ৪/৫ জন লোক নিয়ে কিছু সময়ের জন্য রাস্তা বন্ধ করে এই কাজটি করতো, তাহলে এমন দুর্ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই কাজটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজ দায়িত্বে করেছে। সেখানে যে অপারেটর কাজ করেছে বা যে যন্ত্রটি দিয়ে কাজটি করা হয়েছে তার সক্ষমতা কতটুকু ছিলো এটাও বিচার করা হয়নি…এসব বিষয় নিয়ে তাদের প্রতি প্রশ্ন আছে আমাদের।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজার সঞ্চালনায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সেতু কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি, তিতাস গ্যাস, ঢাকা বিআরটি কোম্পানি, এমআরটি লাইন ১-৫ এসব সংস্থার পক্ষ থেকে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।