প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী

টিবিপি ডেস্ক
০৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:০৭:৩১ | আপডেট: ১ year আগে
ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহুল প্রত্যাশিত তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং (আংশিক উদ্বোধন) শনিবার সকালে করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য নতুন বিশ্বমানের টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। 

তিনি টার্মিনালে পৌঁছালে বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী তাকে অভ্যর্থনা জানান। শিশুদের একটি দল ঐতিহ্যবাহী নাচ এবং বাংলা গানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানায়।

প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন।

পরে তিনি টার্মিনালের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বিমানবন্দরের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

তিনি তার লাগেজ চেকিংয়ের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন পাস করার একটি ড্রেস রিহার্সে অংশ নেন এবং তাকে একটি বোর্ডিং পাস দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর নবনির্মিত টার্মিনাল ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় টার্মিনাল-৩ এর নির্মাণকাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

মূল টার্মিনাল ছাড়াও আমদানি-রপ্তানি সুবিধা সম্বলিত কার্গো কমপ্লেক্সের কাজ প্রায় শেষ। কার্গো কমপ্লেক্সটির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টার্মিনালটি ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্কিংয়ের জায়গা নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে।

২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ (যার মধ্যে ১২টি অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা) এবং ১৫টি সেলফ-সার্ভিসসহ ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার ঢাকা ছেড়ে যাওয়া বা অবতরণের জন্য একটি চমৎকার অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দেয় এটি।

নিচতলায় ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, দ্বিতীয় তলায় ডিপারচার লাউঞ্জ ও বোর্ডিং ব্রিজ এবং বিস্তৃত শুল্কমুক্ত দোকান ও এক্সিট লাউঞ্জ থাকবে।

টার্মিনাল ৩ সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে বার্ষিক ১.২০ কোটি (১২ মিলিয়ন) যাত্রীকে সেবা দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। বর্তমানে বিমানবন্দরটি বছরে ৮০ লাখ (৮ মিলিয়ন) যাত্রীকে সেবা দিতে সক্ষম। একটি বহুতল গাড়ি পার্কিং সুবিধা, কাস্টমস হল, ভিআইপি ও ভিভিআইপি যাত্রী এলাকা এবং একটি ট্রানজিট যাত্রী লাউঞ্জও টার্মিনালের পরিষেবার অংশ।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন (প্রাইভেট) লিমিটেড সিঙ্গাপুরের রোহানি বাহারিনের নকশায় নির্মিত তিনতলা টার্মিনালের ফ্লোর স্পেস হবে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার।

প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে একটি করিডোর এবং ১ হাজার ৩৫০টি পার্কিং স্পেসসহ মাল্টি লেভেল কার পার্কিং বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে।

যাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন টার্মিনালে অটোমেটেড পাসপোর্ট কন্ট্রোল বা ই-গেট চালু করা হবে। যাত্রীরা ই-গেটের মাধ্যমে স্ব-অভিবাসন বেছে নিতে পারেন বা ৫৬টি প্রস্থান ইমিগ্রেশন কাউন্টারের মধ্যে একটি বেছে নিতে পারেন। একটি আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং উন্নত নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করবে।

টার্মিনালে মুভি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট, এয়ারলাইন লাউঞ্জ এবং বিশ্বমানের শুল্কমুক্ত দোকানও থাকবে। ওয়াই-ফাই, মোবাইল চার্জিং, প্রার্থনার জায়গা এবং একটি মিটার্স ও গ্রিটার প্লাজার মতো সুবিধাগুলো স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া মায়েদের জন্য ব্রেস্টফিডিং বুথ, ডায়াপার চেঞ্জিং এলাকা, পারিবারিক বাথরুমসহ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাচ্চাদের জন্য একটি আলাদা খেলার জায়গা থাকবে।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র: ইউএনবি