প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

বঙ্গবন্ধু জাতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ আগস্ট ২০২২ ১১:৪১:২২ | আপডেট: ৩ years আগে
বঙ্গবন্ধু জাতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সরকারে ছিলেন, কিন্তু জাতির পিতা হিসেবে এই সাড়ে তিন বছরে জাতিকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে যা যা দরকার সবগুলো তিনি করে গেছেন। আর সেই সাথে আমাদের দিকনির্দেশনাও দিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সোমবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোমেন বলেন, ‘জাতির ভিত্তি রচনার জন্য দরকার একটা শাষণতন্ত্র। বঙ্গবন্ধু মাত্র নয় মাসের মাথায় একটা অপূর্ব শাষণতন্ত্র আমাদের দিয়ে গেছেন। অথচ পাকিস্তানের শাষণতন্ত্র তৈরি করতে লেগেছে নয় বছর, আর আমেরিকার শাষণতন্ত্র তৈরি করতে লেগেছে তেরো বছর। বঙ্গবন্ধুর কার্যকর নেতৃত্বের জন্যেই মাত্র দুই মাসের মাথায় আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সৈন্য ফিরে গেছে। তার কারণেই সাড়ে তিন বছরেই আমরা ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। প্রতিটি বড় বড় প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ, প্রত্যকের সদস্যপদ এমনকি জাতিসংঘের সদস্যপদ অর্জন করি। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতৃত্বের কারণে।’

তিনি বলেন, ‘পোয়েট অব পলিটিক্স খ্যাত বঙ্গবন্ধু কেবল এ দেশের নয়- তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের নেতা, দেশে দেশে নিপীড়িত জনতার সংগ্রামী চেতনার এক জীবন্ত কিংবদন্তি। আর তাই, বঙ্গবন্ধুকে হারানোর বেদনা কেবল এ দেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে ধ্বনিত হয়, বিশ্বের নেতৃবৃন্দও শোকার্ত হন। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের ঘাতকদের দেশে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য যা যা করার, আমি যতদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছি এই প্রচেষ্টা অবশ্যই চালিয়ে যাবো।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু ‘নন-এলাইন্ড ফরেন পলিসি’ গ্রহণ করেন। এটা যে আমাদের জন্যে কত মঙ্গলজনক, আমরা আজও তাঁর ফরেন পলিসি নিয়ে চলছি। বঙ্গবন্ধু সে সময়ে অনেক ধরনের চাপের মধ্যেও ‘নন-এলাইন্ড পলিসি’ অবলম্বন করেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছেন- পিস ইজ ইম্পারেটিভ ফর ডেভেলপমেন্ট। সে জন্য তিনি সবসময় শান্তির জয়গান গেয়েছেন। আমরা শান্তি চাই। শান্তি উন্নয়নের একটি বড় সহায়ক। আমরা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বঙ্গবন্ধুর এই শান্তির প্রচেষ্টাকে জোর দিতে চাই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাটি ও মানুষকে সবচেয়ে ভালবেসেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষকে যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে কোন কিছুই দাবায়ে রাখতে পারে না। বঙ্গবন্ধু সবক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, আর তার দিকনির্দেশনা অনুসরণ করেই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছেন। এর ফলে আমরা বিশ্বে একটা বিশেষ অবস্থান অর্জন করেছি, একটা ‘রোল মডেল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি। সম্প্রতি আমরা পদ্মা সেতুর মতো বিরাট সেতু নিজেদের পয়সায় তৈরি করেছি।’

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের দেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটা উন্নত, সমৃদ্ধশালী, স্থিতিশীল, অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি হবে- যেখানে অন্ন, বস্ত্র বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য যেন নিশ্চিত হয়- এই প্রচেষ্টাই শেখ হাসিনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ অবস্থায় ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের উন্নয়নের কারণে দেশে বিদেশে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার শুরু করেছে উল্লেখ করে দেশবাসীকে এসব অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলারও আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত একটি অডিও-ভিজুয়াল প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষাংশে বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী সকল শহিদের রুহের মাগফিরাত এবং বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করে দোয়া করা হয়।