গাজীপুর মহানগরীর সাতাইশ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় শহিদুল ইসলাম শহীদ (৫০) নামে এক শ্রমিক নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হামলায় আরও দুই শ্রমিক নেতা আহত হয়েছেন। সোমবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টায় এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জিএমপি’র গাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলো শ্রমিক নেতা হলেন মোস্তফা কামাল (২৬) এবং আহমেদ শরীফ (৩৫)। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
নিহত শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম শহীদ গাজীপুরে শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিটালু গ্রামের মৃত আলীর ছেলে। সে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগরীর সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড পোশাক কারখানায় গত দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবী জানিয়ে আসছে ওই কারখানার শ্রমিকেরা। গত ২১ জুন শ্রমিকেরা তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবীতে আন্দোলন করেন। ২৫ জুন (রোববার) কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবীর প্রেক্ষিতে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের তারিখ দিয়ে নোটিশ দেয়।
নোটিশ অনুযায়ী শ্রমিকেরা তাদের পাওনা গ্রহনের জন্য ওইদিন সকাল থেকে কারখানা গেইটে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ সারাদিন অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পরে শ্রমিকেরা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলার জন্য তারা শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম শহীদসহ আরও দুই নেতার সহযোগিতা কামনা করেন। শ্রমিকদের অনুরোধে তারা ওই কারখানায় গিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে বের হয়ে আসার সময় কারখানার সামনেই অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা ওই তিন শ্রমিক নেতার ওপর হামলা করে। হামলায় শহিদুল ইসলাম শহীদ ও অপর দুইজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার তায়রুন্নেসা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১১ টায় কর্তব্যরত চিকিৎসা শহিদুল ইসলাম শহীদকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জিএমপি’র গাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী জানান, প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড পোশাক কারখানাটি মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার আওতাধীন এবং ওই কারখানার সামনে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। শহিদুল ইসলাম শহীদ যে হাসপাতালে মারা গেছেন সেটি গাছা থানায় এলাকায়। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসে একজনের মরদেহ এবং আহত অবস্থায় দুজনকে পেয়েছি। কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।