প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

বিদেশ থেকে এলো লাশ, কফিন খুলে দাফনের সময় মিললো অন্য মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ মার্চ ২০২৩ ১০:১৭:২৬ | আপডেট: ২ years আগে
বিদেশ থেকে এলো লাশ, কফিন খুলে দাফনের সময় মিললো অন্য মরদেহ

বিদেশ থেকে নির্ধারিত তারিখেই লাশ আসে। সে অনুযায়ী, পরিবারের লোকজন বিমানবন্দরে গিয়ে লাশভর্তি কফিনও বুঝে নেন। ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে স্বজনরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। এরপর লাশ দাফনের জন্য যাবতীয় সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেন। খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু জানাজার আগে কফিন খুলে দেখা যায়, লাশটি আরেকজনের। পরে জানাজা ও কবর কোনটাই আর হয়নি।

শনিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ঘটেছে এমন ঘটনা। বিদেশ থেকে আসা কফিন খুলে পাওয়া লাশটি আফসর মিয়া (৪০) নামের ব্যক্তির নয়। লাশটি জালাল উদ্দিন (৫২) নামের একজনের।

জানা গেছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রিসে মারা যান উপজেলার দামোধরতুপি গ্রামের জমসিদ আলীর বড় ছেলে আফসর মিয়া (৪০)। এরপর শুক্রবার রাতে লাশভর্তি কফিনটি তার স্বজনদের বুঝিয়ে দেয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক। পরে স্বজনেরা লাশ নিয়ে সুনামগঞ্জে চলে যান। শনিবার সকালে এলাকায় মাইকিং করে জানাজার সময় দেখা যায় লাশটি তার নয়।

আফসর মিয়ার ভাগনে তোফায়েল আহমদ বলেন, বিমানবন্দর থেকে তিনি শুক্রবার কফিনভর্তি লাশটি বুঝে নেন। কফিনের ওপরে তার মামার নাম-ঠিকানা লেখা ছিল। কিন্তু শনিবার সকালে কফিন খুলে দেখেন লাশটি তার মামার নয়। এরপর তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান।

এ বিষয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, কফিনে আসা লাশটি মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার শিলনপুর গ্রামের শফিক উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিনের (৫২)। সম্প্রতি তিনি গ্রিসে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস আগে গ্রিসে যান আফসর মিয়া। বাড়িতে তার স্ত্রী ও ছয় বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। তার আরেক ভাই এমরান মিয়াও গ্রিসে আছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আফসর মিয়া লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গ্রিসের একটি হাসপাতালে মারা যান। এমরান মিয়া ভাইয়ের লাশ দেশে আনার সব প্রক্রিয়া শেষ করে নিজেও দেশে চলে আসেন।

আফসর মিয়ার লাশ ১৩ মার্চ দেশে আসবে জানিয়ে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালেদ চৌধুরী বলেন, গ্রিস থেকে লাশ পাঠানোর সময় জালাল উদ্দিনের কফিনে ভুলবশত আফসর মিয়ার নাম-ঠিকানাযুক্ত করায় এই সমস্যা হয়েছে।

জালাল উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যায় লাশটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তার স্বজনেরা লাশটি বুঝে নেবেন।