প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

ভাঙারি দোকানির বাড়িতে মাধ্যমিকের ৫০০ কেজি বই!

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫৯:১৪ | আপডেট: ২ years আগে
ভাঙারি দোকানির বাড়িতে মাধ্যমিকের ৫০০ কেজি বই!

বছর শেষে অতিরিক্ত বই শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ২০২২ শিক্ষাবর্ষের ৫০০ কেজির অধিক বই মিলেছে ভাঙারি দোকান মালিকের বাড়িতে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির এসব নতুন বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের রওশন আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে।

চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত বই নিয়েছিল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের রওশন আরা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য শিক্ষাবোর্ডের অতিরিক্ত বই উত্তোলন ছাড়াও শ্রেণিভিত্তিক দুই একটি বিষয়ের শিক্ষার্থীদের না দিয়ে, কেজি দরে বিক্রি করতে তা মজুদ রাখা হয়েছিল বিদ্যালয়ে। বিক্রির পর বিষয়টি জানতে পারেন শিক্ষার্থী অভিভাবক, কমিটির সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা এও জানতে পারেন উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী আন্ধারিয়াপাড়া হুকুম চাঁদা গ্রামের ভাঙারি ব্যবসায়ী আজিজুলের বাড়িতে রয়েছে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের বিপুল পরিমাণ পাঠ্যবই। এমন খবরে শনিবার স্থানীয়রা তার বাড়িতে গেলে সেখানে মিলে ৮ বস্তা বই।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরাতন জিনিসপত্র কিনে নিজ বাড়িতে রেখে পরে অন্যত্র বিক্রি করি। বৃহস্পতিবার রওশন আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৪০ টাকা কেজি ধরে ৫৩০ কেজি বই ও খাতা ক্রয় করি। এসময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন স্যার, রোকন স্যার, দেলোয়ার কেরানীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন ৩৯ টাকা দরে ৫৩০ কেজি বইয়ের মোট ২০ হাজার টাকা নেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রী অভিভাবক রাজু মিয়া জানান, ‘আমার মেয়ে সবগুলো বই পায়নি। আমার চাচাতো বোনের পুরাতন বই এনে আমার মেয়ে পড়ছে।’

কমিটির অভিভাবক সদস্য কফিল উদ্দিন, সুলতান মিয়া ও আজিজুল হক বলেন, ‘এমনিতেই সারাদেশে বইয়ের সংকট অথচ আমাদের ম্যাডাম মেয়েদের বই না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেন। তিনি বেশি বেশি চাহিদা দিয়ে বইয়ের সংকট সৃষ্টি করতে চান।’

শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ২০২২ সালের চাহিদার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তার বলেন, ‘বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। প্রধান শিক্ষককে বলেছি অব্যবহৃত বই থাকলে সেগুলো উপজেলায় জমা দিতে। সেগুলো উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্নভাবে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’