বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষায় যারা প্রাণ দিয়েছেন, সেই বীর শহীদদের স্মরণে ভিন্নধর্মী আয়োজন করেছে রাজধানীর বাড্ডা রেসিডেন্সিয়াল হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। একুশে ফেব্রুয়ারির আগেই বাংলা মায়ের বীর সন্তানদের স্মৃতিচিহ্ন শহীদ মিনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রঙ-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন বাংলা বর্ণমালা ও শহীদ মিনার।
মঙ্গলবার প্রভাত ফেরি শেষে শিক্ষার্থীরা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে করা প্রভাত ফেরিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেন।
জানতে চাইলে বাড্ডা রেসিডেন্সিয়াল হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক কে এম জাহিদ বলেন, ‘আমাদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন মারা গেলে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় আমরা তো পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করি। যাদের জন্য আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি, সেই সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় এ আয়োজন করেছি।’
দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মুহাম্মদ নুরুন্নবী, প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম জয়সহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর ২১শে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।
সেদিন মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত ও সফিউররা। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রথম নজির এটি। সেদিন তাদের রক্তের বিনিময়ে শৃঙ্খলযুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা ও মায়ের ভাষা। আর এর মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সহৃচনা হয়েছিল তা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।