প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

মহানন্দার পাড়ে ঘন ঘন কুমিরের দেখা, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৫১:১৩ | আপডেট: ২ years আগে
মহানন্দার পাড়ে ঘন ঘন কুমিরের দেখা, আতঙ্কে এলাকাবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রহনপুর পৌর এলাকার পুনর্ভবা ও মহানন্দা নদীতে কুমিরের বিচরণে আতঙ্কে এলাকাবাসী। শুক্রবার সকাল থেকে পৌর এলাকার গুজরঘাট ও বেইলি ব্রিজ এলাকায় দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত একটি বিশাল আকারের কুমির দেখতে পাওয়া যায়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরেও কুমিরের বিচরণ দেখতে পান এলাকাবাসী। এ সময় নদীর দুই ধারে উৎসুক জনতার ঢল দেখা গেছে।

রহনপুর পৌর এলাকার রহমতপাড়ার ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি মহান্ত ঘাটে কুমির দেখেছি। এখন নদীতে গোসলে নামতে ভয় পাচ্ছে অনেকেই। এলাকাবাসীর মধ্যে এ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আমরা বন্যপ্রাণী অধিদপ্তরকে অনুরোধ করছি যেন এ কুমিরটি তারা ধরে নিয়ে যায়।’

মহান্ত ঘাট এলাকার জেলে পরান আলী বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বেইলি ব্রিজের নিচে একটি কুমির দেখতে পেয়েছি। কুমিরটি বেশ বড় আকারের। নদীর পাড়ে উঠে কয়েকটি হাঁস খেয়েছে। অনেকেই বলছে নদীতে নাকি আরও একটি কুমির আছে।’

স্থানীয়রা জানান, এর আগে ফেসবুকে ভারতের মালদা জেলার মহানন্দা নদীতে কুমির চলাচলের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেহেতু নদীটির সঙ্গে বাংলাদেশের মহানন্দা নদীর সংযোগ রয়েছে, সেহেতু ধারণা করা হচ্ছে ভারত থেকেই মহানন্দা নদী হয়ে পূণর্ভবা নদীতে কুমিরটি প্রবেশ করে থাকতে পারে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহীর পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘কুমির একটি হিংস্র স্বভাবের প্রাণী। আর এই নদীতে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় কুমিরটিকে আমরা ধরতে পারছি না।’

এলাকাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কুমিরের দেখা পেলে অতি উৎসাহী হয়ে বিরক্ত করবেন না। বাচ্চাদের নদীর কিনারায় যেতে দেবেন না। দিনে ও রাতের বেলায় মাছ আহরণের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিরত থাকতে হবে নদীতে গোসল করা থেকেও। ছোট ছোট নৌযান (নৌকা ও ভেলা) চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখতে হবে। কুমিরের রোদ পোহানোর সময় ঢিল ছোড়া যাবে না।’ তিনি এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করার কথা জানান।

জাহাঙ্গীর কবির আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী কুমিরকে বিরক্ত করা, রোদ পোহানোর সময় ঢিল ছোড়া, তাড়ানোর চেষ্টা করা, ধরা, মারা, ত্রুয়-বিক্রয়, পাচার করা, পরিবহন করা, হত্যা ইত্যাদি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রহনপুর পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান খান বলেন, ‘রহনপুর পূণর্ভবা নদীতে কুমির দেখতে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। তাই বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য মাইকিং করেছি। আর এখন যেহেতু শীতকাল চলছে তাই নদীর পাড়ে উঠে কুমির রোদ পোহাচ্ছে। তখন যেন তাকে কেউ ঢিল ছুড়ে বিরক্ত না করে, সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’