দীর্ঘ ১১ বছর পর আজ চট্টগ্রাম নগরে দলীয় জনসভায় বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম সফরকালে ২৯টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি। এসব প্রকল্পের আর্থিক মূল্য ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ড. বদিউল আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। আর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন চারটি প্রকল্পের।
প্রধানমন্ত্রী যেসব মন্ত্রনালয়ের অধীন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হলো- শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য, কৃষি, নৌপরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
আর যেসব মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সেগুলো হলো- ধর্ম মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ের অধীন লালদীঘি মাঠে নির্মিত ৬ দফা মঞ্চ উদ্বোধন করবেন। এর বাইরে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার ১৮টি স্কুল-কলেজের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন জাতিসংঘ পার্ক সংস্কার, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের প্রধান ভবন নির্মাণ প্রকল্প, বাঁশখালী মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প।
এ দিন সকাল ১০টা থেকে জনসভার মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরপর দুপুর ১২টায় স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন। বিকেল ৩টার দিকে সভাস্থলে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে যাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘ইতোমধ্যে জনসভার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাদের তদারকিতে সুন্দর একটি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এটি স্মরণকালের বড় জনসভা হবে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ) থেকে হেলিকপ্টারযোগে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নামবেন।’
তিনি বলেন, ‘এই জনসভাকে ঘিরে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রচার চলছে। নগরের অলিগলি রাজপথ ছেয়ে গেছে পোস্টার ব্যানার ও তোরণে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী যেসব সড়ক ব্যবহার করে জনসভায় যাওয়া-আসা করবেন, সেসব সড়কে ব্যানার-পোস্টার লাগানোর জায়গা নেই। ইতোমধ্যে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে জনসভার দৃষ্টিনন্দন মঞ্চ। ৩ হাজার ৫২০ বর্গফুটের এই মঞ্চে কমবেশি ২০০ মানুষ বসতে পারবেন।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনসভা ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসএসএফ আগে থেকে জনসভাস্থলসহ সম্ভাব্য সব স্থানের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার দায়িত্বে কেবল মাঠ ও আশপাশের এলাকায় সাত হাজারের বেশি পুলিশ থাকছে।
জনসভা মাঠ ও আশপাশের এলাকায় ৩০০ মাইক বসানো হয়েছে। জনসভাস্থলের দুই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত জনসভার মাইকের শব্দ পাওয়া যাবে। মাঠে থাকবে ৩০ পেয়ার সাউন্ড সিস্টেম। নগরের দেওয়ানহাট, সিআরবি, এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, কদমতলী, স্টেশন রোডসহ আশপাশের এলাকায় এই মাইকগুলো লাগানো হয়।
এছাড়া টাইগারপাস দেওয়ানহাট, সিআরবি, স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি বড় পর্দা লাগানো হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জনসভা সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ।