প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

কক্সবাজারে ২ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ আগস্ট ২০২৩ ১১:০৮:১৩ | আপডেট: ১ year আগে
কক্সবাজারে ২ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি, জোয়ারের পানি ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজার জেলার ১৫টি ইউনিয়নের ২ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে চকরিয়া উপজেলার ১২টি ও ঈদগাঁও উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন রয়েছে।

এছাড়াও কম বেশি প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।

মেরিন ড্রাইভ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টসহ উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছে আবহাওয়ার অফিস।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আঞ্চলিক কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র দাশ জানান, রোববার বিকাল ৩টা থেকে সোমবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়। এরমধ্যে সোমবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৮১ মিলিমিটার।

আগামী তিনদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টি, জোয়ারের পানি এবং পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি রয়েছেন মানুষ।

চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী জানান, পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরি নদীতে ভেসে আসা কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে রশিদ নামের এক যুবক নিখোঁজ হন। দুপুর ১টার দিকে নিখোঁজ হওয়া ওই যুবকের লাশ বিকাল ৩টার দিকে নদীর লক্ষ্যরচর মোহনা থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, পাবর্ত্য জেলা ও চকরিয়ার পাহাড়ি ঢল নেমে আসার মাধ্যম মাতামুহুরী নদী। পাহাড়ি ঢল, বৃষ্টি ও জোয়ারের ঢেউতে বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

চকরিয়ার একটি পৌরসভা ও ১৮ টি ইউনিয়নের মধ্যে পৌরসভাসহ ১২ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। এর মধ্যে ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে কাকড়া, লক্ষ্যরচর, বুমুবিল ছড়ি, সুরেজপুর-মানিকপুর, কৈয়ারবিল, কোনাখালী ইউনিয়ন।

তবে পানি নেমে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান জানান, ১২টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। মাতামুহুরী নদীতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্লাবিত এলাকার লোকজনকে সরকারি সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে। প্লাবিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে উপকূলী ও কিছু পাহাড়ি অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে চকরিয়া এবং পেকুয়ায় বেশি প্লাবিত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এসব এলাকার পানিবন্দি মানুষদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চকরিয়ায় ৭ হাজার এবং পেকুয়ায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

এদিকে, সামুদ্রিক জোয়ারের ঢেউতে মেরিন ড্রাইভ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা পয়েন্ট, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

মেরিন ড্রাইভের কিছু অংশে জিওব্যাগে বালির বাঁধ তৈরি করে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হলেও নতুন করে আরও কয়েকটি স্পটে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র: ইউএনবি