যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিশ্চিতে ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের জোট জেন্ডার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ।
রোববার 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২২' উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন বলেন, পুরুষের পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছে নারীরাও। তবে নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা এখনো বৈষম্যের শিকার। শারীরিক, মানসিক, মৌখিক, বিভিন্নভাবে নারীরা যৌন হয়রানির শিকারও হচ্ছেন।
নারীর নিরাপত্তার বৈষম্য খুবই প্রকট উল্লেখ করে তিনি বলেন, দিনে দিনে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে এবং বর্তমানে তা এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি করে। তাই কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল ধরনের সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে “যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন” প্রণয়ন করা খুবই জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে হয়রানি ও নির্যাতন রোধে যে সাত দফা দাবি তুলে ধরে জেন্ডার প্লাটফর্ম-
১. যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।
২. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।
৩. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে দেয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৪. আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সে জন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে।
৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে হবে।
৬. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর সংশোধনীতে মহিলাদের প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ ক এবং সেই বিধি (২) এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটি গঠন হাইকোর্টের প্রদানকৃত গাইডলাইনের ভিত্তিতে করতে হবে।
৭. নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর, কর্মজীবী নারী’র নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সানজিদা সুলতানা, ফেয়ারওয়্যার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার বাবলুর রহমান, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।