প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

কালবৈশাখীর বজ্রপাতে আট জেলায় ৯ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৩৫:১২ | আপডেট: ২ years আগে
কালবৈশাখীর বজ্রপাতে আট জেলায় ৯ মৃত্যু

হঠাৎ কালবৈশাখী ও বজ্রপাতে আট জেলায় শ্রমিক, কৃষক ও যুবকসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : শিবগঞ্জে আমবাগানে ফ্রুট ব্যাগিং করার সময় বজ্রপাতে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়। গতকাল দুপুর সোয়া ১টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের মাস্তান বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের আমবাগানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের মো. আবদুল কাদেরের ছেলে মো. শাহিন ও একই ইউনিয়নের শরৎনগর গ্রামের মো. হরুন আলীর ছেলে মো. অসিম।

স্থানীয়রা জানান, আমবাগানে ফ্রুট ব্যাগিং করার কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে গাছ থেকে পড়ে যাওয়া আমগুলো সংরক্ষণ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই শাহিন ও অসিমের মৃত্যু হয়। এ সময় স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এর মধ্যে নয়নের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

চৌগাছা (যশোর) : চৌগাছায় মাঠে ধান গোছানোর সময় বজ্রপাতে সাগর কুমার বিশ্বাস (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। গত বুধবার রাত ৯টার দিকে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তারিনিবাস গ্রামের মাঠে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি চৌগাছা পৌরসভার ৭ নম্বর

ওয়ার্ডের হালদার পাড়ার রবি কুমারের (রবি মালো) ছেলে। সাগর কুমার পেশায় মৎসজীবী (মালো) ছিলেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন জানান, রাত ৮টার দিকে সাগর তার বাবাসহ চারজন কপোতাক্ষ নদ পার হয়ে তারিনিবাস মাঠে নিজেদের জমির ধান গুছিয়ে বৃষ্টিতে যেন নষ্ট না হয় সে জন্য পলিথিন দিয়ে ঢাকতে যায়। এরপর তারা মাঠে ধান গোছানো (জালি দেওয়া) অবস্থায় বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাগরের মৃত্যু হয়।

মেহেরপুর : মুজিবনগরের দারিয়াপুর নিজ জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে শাহাবুদ্দিন (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। গতকাল বিকালে উপজেলার দারিয়াপুর-শালিকা সড়কের বাউন দা মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শাহাবুদ্দিন বিদ্যাধরপুরের মৃত আলিমুদ্দিনের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, শাহাবুদ্দিন ঘটনার সময় নিজ জমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ কালবৈশাখী ও ব্রজপাতের ঘটনা ঘটে।

রাজবাড়ী : গোয়ালন্দে শহিদুল ইসলাম (৩২) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। গতকাল বিকালে গোয়ালন্দ উপজেলার হামিদ মৃধার হাট এলাকায় উস্তে ক্ষেতে কাজ করার সময় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার চর দৌলতদিয়া খালেক মৃধার পাড়ার জামাল মৃধার ছেলে।

বেনাপোল (যশোর) : শার্শায় মাঠ থেকে ধান তোলার সময় বজ্রপাতে কামরুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। গতকাল বিকালে উপজেলার পাঁচ কায়বা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কামরুল ইসলাম পাঁচ কায়বায় গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় কৃষক। নিহতের পরিবার জানান, বিকালে কামরুল ইসলাম জমি থেকে ধান তোলার জন্য মাঠে যান। এ সময় বৃষ্টিপাত শুরু হলে হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে আবদুল্লাহ মোল্যা (৩৪) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার বিহারীনগর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আবদুল্লাহ মোল্যা ওই গ্রামের মৃত অহেদ বকসের ছেলে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, বিকালে আবদুল্লাহ মাঠে ধান কাটছিলেন। হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিপাত শুরু হলে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। এ সময় তিনি উঠানে পৌঁছানো মাত্রই বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ সদরে বজ্রপাতে সুজন হোসেন (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। বিকালে উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নের কুবিরখালী গ্রামের খালপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত সুজন ওই গ্রামের রমিজ উদ্দীনের ছেলে। বিকালে কৃষি কাজ করতে মাঠে যান সুজন হোসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : কালীগঞ্জে বোরো ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মনির হোসেন ওরুফে মনু নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কলেজ শিক্ষার্থীসহ আরো সাতজন আহত হন। ঘটনাটি ঘটে গতকাল পৌনে ৬টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানী পশ্চিম পাড়া মৃত সিদ্দিক খন্দকারের বাড়ি সংলগ্ন মাঠে। নিহত মনিরের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মধ্যউড়িয়া গ্রামে। আহতরা হলেন- একই উপজেলার এরশাদ আলী, গোলাপ, লাল মিয়া, সায়েদা এবং কালীগঞ্জ উপজেলার ছাতিয়ানী গ্রামের শাকিলা খন্দকার। শাকিলা ঢাকা ইডেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্যের ছাত্রী। তার বাবা শহিদুল্লাহ খন্দকার ওরুফে করম মাস্টার। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।