বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক মহান মুক্তিযুদ্ধে রক্তদানের মাধ্যমে। ৫০ বছর ধরে এ সম্পর্ক বিদ্যমান আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে এ সম্পর্ক অন্য রকম উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। গঙ্গা বিলাসের এই সফরের মধ্য দিয়ে তা পশ্চিমা দেশে পৌঁছে গেছে। তাদের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে চলে গেছে। গঙ্গা বিলাস জাহাজটি যখন বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে, তখন বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে ছড়িয়ে দিয়ে আরও রঙিন করে দিয়ে যাবে।’
শনিবার মোংলা বন্দরে ভারতীয় ক্রুজ ভেসেল ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’-এর আগমন উপলক্ষে পর্যটকদের অভ্যর্থনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, সুইজারল্যান্ডের পর্যটক হ্যান্স কাফম্যান।
ভারতের পর্যটকবাহী নৌযান ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ গতকাল ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করে। ‘গঙ্গা বিলাস’-এর পর্যটকদের বাংলাদেশের খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আংটিহারায় অনবোর্ড ইমিগ্রেশন করা হয়েছে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি গঙ্গা বিলাস বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করবে।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি বিলাসবহুল গঙ্গা বিলাস’ ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে যাত্রা শুরু করেছে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি ‘গঙ্গা বিলাস’-এর যাত্রা উদ্বোধন করেন।
বিলাসবহুল প্রমোদতরি গঙ্গা বিলাস বাংলাদেশে প্রবেশের পর সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শন করে বিদেশি পর্যটকরা মোংলা বন্দর ঘুরে দেখবেন। তারপর যাবেন বাগেরহাটের ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদে। সেখান থেকে বরিশাল ঘুরে চলে যাবেন মেঘনা ঘাটে। সেখানে নোঙর করার পর দুই দিন সোনারগাঁ ও ঢাকায় ঘুরবেন তারা। পরে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ হয়ে যাত্রীরা কুড়িগ্রামের চিলমারীতে যাবেন। সেখানে রংপুরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করবেন তারা। এরপর চিলমারী থেকে ভারতের আসামে প্রবেশ করবে গঙ্গা বিলাস।
তিনটি ডেকসহ দৈর্ঘ্যে ৬২ মিটার লম্বা ও প্রস্থে ১২ মিটারের এমভি গঙ্গা বিলাসের ২৮টি বিলাসবহুল কামরায় সুইজারল্যান্ডের ২৭ জন ও জার্মানির ১ জন ভ্রমণ করছেন।
১৯৭২ সালের প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল; যা এখনও কার্যকর আছে। প্রটোকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোস্টাল ও প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। সেই আলোকে ২০১৮ সিলে এসওপি সই হয়। এর আওতায় ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর পর থেকে তিনটি ভারতীয় ও একটি বাংলাদেশি নৌযান চলাচল করেছে।