প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

জলবায়ু পরিবর্তন: উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও সহায়তার আহ্বান মোমেনের

ইউএনবি
১১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:২৬:০৬ | আপডেট: ২ years আগে
জলবায়ু পরিবর্তন: উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও সহায়তার আহ্বান মোমেনের

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর ফলে বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে তা আরও বেড়ে যাওয়া; কোনো কিছুই পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়ন হ্রাস বা অন্য কোন সিদ্ধান্তের অজুহাত হতে পারে না।

রোববার লোকালি লেড অ্যাডাপ্টেশন (এলএলএ) এর গ্লোবাল হাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে মোমেন এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, গ্লোবাল হাবের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনকে (জিসিএ) পূর্ণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

মোমেন বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি আমাদের প্রতি তার অবিরাম সমর্থনের স্পষ্ট সাক্ষ্য দেয়।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এসময় বান কি মুন এবং সমগ্র জিসিএ দলকে আবারও অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে জিসিএ গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে কাজ করতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি। সত্যিই ঢাকায় আজ এই জিসিএ আঞ্চলিক অফিসের গ্লোবাল হাবের উদ্বোধনের আয়োজন একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। শিগগিরই আমরা অন্যান্য আয়োজন করার পরিকল্পনা করছি।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব এবং বোর্ডের চেয়ার, গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন বান কি-মুন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন প্রফেসর ড. প্যাট্রিক ভারকুইজেন এবং ব্রিটিশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বক্তব্য দেন।

মোমেন গ্লোবাল হাব প্রতিষ্ঠায় সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি যুক্তরাজ্যকে অনুসরণ করে অন্যান্য দেশ/প্রতিষ্ঠানগুলো উদার অর্থায়নে এগিয়ে আসবে।’

মোমেন বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশের ছয় লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং নদী ভাঙনের কারণে তাদের ঘরবাড়ি, তাদের পূর্বপুরুষের পেশা থেকে উৎখাত হচ্ছে। তাদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিচ্ছে সরকার, যদিও তাদের উৎপাটনে সরকারের কোন ভূমিকা নেই।

বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর প্রায় ২০ শতাংশ বন্যায় প্লাবিত হবে এবং কয়েক লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যূত হবে।

মোমেন বলেন, ‘যদি কয়েক লাখ লোক তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যূত হয়, তবে এটি একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করবে।’

তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি হওয়ার আগে আমি বিশ্ব নেতাদের তাদের পুনর্বাসনের দায় ভাগ করে নিতে এবং এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসার অনুরোধ করব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জিসিএ-এর সঙ্গে আমাদের যাত্রা প্রতিশ্রুতিপূর্ণ ও অগ্রগতিশীল। এটা দেখে আমি আনন্দিত যে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে জিসিএ ও বাংলাদেশ সরকার অভিযোজন কার্যক্রম গড়ে তুলেছে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই গ্লোবাল হাবের মাধ্যমে অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে ভাসমান কৃষি, বৃষ্টির জল সংগ্রহ, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, জলবায়ু প্রতিরোধী ফসলের জাতগুলোর মতো ঘরোয়া সমাধানগুলো বিনিময় করতে প্রস্তুত।