ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলের জন্য টোল নির্ধারণ করেছে সরকার। রোববার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সাড়ে ১১ কিলোমিটার কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উদ্বোধন করা হবে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করা যানবাহনকে টোল দিতে হবে চার ক্যাটাগরিতে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্যাটাগরি-১ এ কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের কম) ৮০ টাকা, ক্যাটাগরি-২ এ মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, ক্যাটাগরি-৩ এ ট্রাক (৬ চাকার বেশি) ৪০০ টাকা, ক্যাটাগরি-৪ এ সব ধরনের বাস (১৬ সিট বা তার বেশি) ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম নুরুল আমিন উল্লাহ নুরী, সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেনসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট সেতুমন্ত্রী জানান, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেদিন তিনি বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাই-সাইকেল, থ্রি-হুইলার চলবে না। আপাতত মোটরসাইকেলও চলবে না।’
২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সংশোধিত চুক্তি সই হয়। থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ, চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের ৩৪ শতাংশ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ অংশীদারত্বে নির্মাণ হচ্ছে প্রকল্পটি।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিক প্রকল্পটি হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-মালিবাগ-খিলগাঁও-কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। এক্সপ্রেসওয়ের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার, র্যাম্পসহ দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা; যার ২৭ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার ভিজিএফ হিসেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে এবং আগামী বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে, যার মূল অংশের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার এবং র্যাম্পসহ ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এই অংশে মোট ১৫টি র্যাম্পের মধ্যে ১৩টি র্যাম্প যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা থাকবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এতে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট।