বিআরটি প্রকল্পের কারণে এমনিতেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে ধীর গতি ছিল। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টির কারণে এই মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে গর্ত ও খানাখন্দে পানি জমে থাকার কারণে বেশ কয়েকটি স্থানে লেন সংকুচিত হয়ে এক লেনে গাড়ি চলাচল করছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বৃহস্পতিবার ট্রাফিক বিভাগ বলছে, পিচ ঢালাই না থাকায় খানাখন্দে যানবাহন বিকল হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। টঙ্গীর বড়বাড়ি থেকে স্টেশন রোড এলাকায় ঢাকাগামী ও ময়মনসিংহগামী লেনে আটকে গেছে যানবাহন। তবে চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
পুলিশ, যাত্রী ও বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা জানান, কাটাছেঁড়া এ মহাসড়কে হেলেদুলে কোনোরকমে চলছে যানবাহন। গত সোমবারের একদিনের বৃষ্টিতে তিন দিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এ বেহাল দশা। টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় মহাসড়কের দুই লেনেই নেই পিচ ঢালাই। খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে বিঘ্ন হচ্ছে যানবাহনের স্বাভাবিক গতি।
বড়বাড়ি থেকে টঙ্গী বাজার পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। গৌন্তব্যে সময়ে পৌঁছানোর জন্য অনেকেই গাড়ি ছেড়ে হেঁটেই রওনা হন। আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের বড়বাড়ি থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত ঢাকাগামী লেনে প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
টঙ্গীর যানজটের কথা মাথায় রেখেই কাক ডাকা ভোরে গাজীপুরের সালনা এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে রওনা হয়েছেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, যানজটের কথা মাথায় রেখে ভোরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তবুও যানজট পিছু ছাড়ল না। ঘণ্টা খানেকের পথ পেরুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে। এ থেকে মুক্তির পথ খোঁজা দরকার।
এদিকে ধানমন্ডি থেকে আবদুল্লাহপুর প্রতিদিন অফিস করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রিদিতা খান। তিনি বলেন, আজ আমার অফিসে আসতে অন্যদিনের চেয়ে সময় লেগেছে তিনগুণ। বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তি এড়াতে তিনি মূল মহাসড়ক ছেড়ে ভেতরের রাস্তা দিয়ে হেটে অফিসে এসেছেন।
ঢাকা থেকে গাজীপুরে অফিস করতে যাওয়া কণিকা জানান, বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় যানজট দীর্ঘ হয়েছে। এ জন্য অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ যানজটে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছে যাত্রীরা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো.আলমগীর হোসেন বলেন, সড়কের নিচের অংশে স্থায়ীভাবে কাজ না করায় সড়কে বাড়ছে দুর্ভোগ। বছরের পর বছর ধীরগতিতে চলছে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত সড়কে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ। উন্নয়ন প্রকল্প শেষ না হলে সহসাই দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এই অংশের পথচারীদের।