লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় তিস্তা মেগা প্রকল্প পরিদর্শন করেন চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ তিন সদস্যের একটি দল।
রোববার দুপুরে পরিদর্শনের সময় তিনি প্রকল্পটির বিষয়ে তিস্তা পাড়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে লি জিমিং বলেন, তিস্তা একটি বৃহৎ নদী। এটি খনন করতে পারলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে। এটি বাংলাদেশে আমার প্রথম কাজ। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন যদিও চ্যালেঞ্জের, তবুও আমরা এটি করব।
তিনি আরও বলেন, আমরা এসেছি নদীটি খননের সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য। আমাদের প্রকৌশলীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর পরিকল্পনা করা হবে যে, কবে থেকে কাজটি শুরু কর যায়। তবে আশা করছি শিগগিরই আমরা তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করতে পারব। এটি শুধু এ অঞ্চলের মানুষের জন্য সুসংবাদ নয়, পুরো বাংলাদেশিদের জন্যও গর্বের বিষয়।
জানা গেছে, পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান শহরের আদলে তিস্তার দুই পাড়ে পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহর গড়ে তোলা হবে। এছাড়া নদী খনন ও শাসন, ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা, আধুনিক কৃষি সেচ ব্যবস্থা, মাছ চাষ প্রকল্প, পর্যটনকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে সাত থেকে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এতে করে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার আর্থিক সমৃদ্ধি হবে।
হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোতাহার হোসেন বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূত তিস্তা ব্যারাজে পরিদর্শনে এসে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। তারা কাজ করতে আগ্রহী। আমি আশা করি চীন ছাড়া তিস্তার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব না। কারণ, ভারত দিয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা আর চীন দিয়েছে আট হাজার কোটি টাকা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চল প্রকৌশলী আমিনুল হক ভূঁইয়া, লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান, ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা, লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক (রাজস্ব) টিএম মমিন, হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন।
তিস্তা ব্যারেজ পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রদূত রংপুরের উদ্দেশে রওনা করেন। সেখানে তিনি মহিপুর ব্রিজ ও কৃষি প্রকল্প, গাইবান্ধা তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজ, নীলফামারির উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ জোন, দিনাজপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক থার্মাল পাওয়ার স্টেশন ও সৈয়দপুর পাওয়ার স্টেশন পরিদর্শন করবেন।