আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে সেটি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় নির্বাচন কোনো সহজ কর্ম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার সকালে নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘আমরা যদি সুন্দরভাবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে পারি; এর সঙ্গে আরও কতগুলো বিশেষণ যুক্ত হয়েছে, সেটি হলো-অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য। এটি গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এটি একটি বড় জিনিস। এটা পরিমাপ করার কোনো যন্ত্র আমাদের হাতে নেই। তারপরও জনগণের যে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয় নির্বাচনের পরে; নির্বাচনের শুদ্ধতা ও সিদ্ধতা প্রশ্নে, ওটার ওপর জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। এটাও কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ যেখানে সত্যিকার অর্থে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, তা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারলে আমাদের সার্থকতা হবে। এর সঙ্গে আরেকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে ক্রেডিবিলিটি। আমাদেরকে সমন্বিতভাবে চাইতে হবে এবং এটি বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।’
নির্বাচন কোনো সহজ কর্ম নয় উল্লেখ্য করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছায়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে নির্বাচন নিয়ে হা-হুতাশ করতে হয় না। বিশেষ করে ইউরোপের অনেকগুলো দেশ, যেখানে নির্বাচনগুলো খুব শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে যায়। ওরা গণতন্ত্রের একটা বিশেষ অবস্থানে গিয়ে স্থির হয়েছে। আমরা এখনো এরর অ্যান্ড ট্রায়াল পদ্ধতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।’
‘এই এগিয়ে নেওয়ার যাত্রায় আমরা সকলেই সারথি। আমরা যদি আমাদের জ্ঞান, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, শক্তি এবং সততা দিয়ে নির্বাচনটাকে নির্বাচন অর্থে পরিচালনা করতে পারি। যেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার সত্যিকার অর্থে স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারবে, তাহলেই সেই নির্বাচনটা প্রকৃত অর্থে নির্বাচন। কারণ সে ক্ষেত্রে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হয়ে থাকবে,’ বলেন সিইসি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন মন্তব্য করে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তাদের প্রশিক্ষণেরে উপযুক্ত করা হবে। ৯ লাখের বেশি নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব উপলব্ধি করতে হবে। রিটার্নিং অফিসারের যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা তা বর্ধিত এবং দায়িত্বপূর্ণ করা হয়েছে।’
আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে শনিবার থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এই প্রশিক্ষণ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ইসির প্রশিক্ষিত সাড়ে তিন হাজার এক্সপার্ট মাঠ পর্যায়ের প্রায় ৯ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।