পদ্মা সেতুর ওপর থেকে মাঝ পদ্মায় ঝাঁপ দিয়ে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। খোঁজাখুঁজি করেও ওই যুবকের সন্ধান পায়নি মাওয়া নৌ পুলিশ।
সোমবার দুপুরের দিকে সেতুর মাওয়া প্রান্তে এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ যুবকের নাম মো. নুরুজ্জামান (৩৮)। তিনি পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। নুরুজ্জামান ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার চোরাইল এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে।
মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফ হোসেন জানান, সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে ৯৯৯ থেকে ফোনে জানানো হয় পদ্মা সেতু থেকে এক ব্যক্তি নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। খবর পেয়ে নৌ পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। রাত আটটা পর্যন্ত নদীতে খোঁজাখুঁজি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে আবারও অনুসন্ধানের কাজ শুরু হবে।
মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রোববার রাতে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করেছিলেন নুরুজ্জামান। সোমবার ভোরে ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তিকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। কিন্তু ফুল দেওয়ার জন্য অনুমতি কার্ড না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। এরপর পদ্মা সেতু দিয়ে ফেরার পথে চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে ঝাঁপ দেন তিনি।
আরও পড়ুন- পদ্মা সেতুর টোল আদায় ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে
এসআই জানান, ‘ঝাঁপ দেওয়ার আগে নুরুজ্জামান মোবাইলে ভিডিও করেছিলেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান সবার। আমরা কেন ফুল দিতে পারব না?’
গাড়িতে নুরুজ্জামানের পাশে থাকা ওমর ফারুক বলেন, ‘সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছাই সকাল সাড়ে ১০টায়। এরপর সেখানে ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করে চেষ্টা করি ফুল দিতে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো কার্ড না থাকায় আমরা ফুল দিতে পারিনি। এরপর সেখান থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা করি।’
তিনি বলেন, ‘সেতুতে অবস্থানকালে গাড়িটি কম গতিতে চলছিল। কারণ সেখানে সেতু কর্তৃপক্ষ ডিভাইডার দিয়ে রেখেছিল। তখন নুরুজ্জামান গাড়ি থামাতে বললেও আমরা তার কথা শুনিনি। এরপর তিনি কিছু না বলেই দরজা খুলে সেতু থেকে ঝাঁপ দেন। এরপর ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানালে নৌ পুলিশ এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। ’
ফারুক বলেন, ‘তারা ১৩ হাজার টাকায় প্রাইভেটকারটি ভাড়া করেছিলেন। তারপর টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে ঢাকার শাহবাগ থেকে ফুলের তোড়া কিনেছিলেন। ঝাঁপ দেওয়ার আগে সেতুতে অবস্থানকালে নুরুজ্জামান মোবাইলে নিজের ভিডিও চালু করে কথা বলছিলেন। তিনি শেখ মুজিবকে ভালোবাসেন, ফুল দিতে পারেননি তাই কষ্ট পেয়েছেন।’
রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘এক লোক পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। আমরা এখনো তাকে পাইনি ‘ তবে কী কারণে তিনি গাড়ি থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
