পদ্মা সেতুর পর বাঙালির আরেক সাফল্য মেট্রোরেল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আরেকটি নতুন অহংকারের পালক জনগণের মাথার মুকুটে সংযোজন করলাম।’
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় উত্তরার ১৫ নং সেক্টরের খেলার মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সকাল ১১টা ৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের নাম ফলক উন্মোচন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতি সারা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। পদ্মা সেতুর পর বাঙালির আরেক সাফল্য মেট্রোরেল। আজকে আরেকটি নতুন অহংকারের পালক জনগণের মাথার মুকুটে সংযোজন করলাম।’
আরও পড়ুন- মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বক্তব্যের শুরুতে দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। সে জন্য সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সরকার প্রধান বলেন, মেট্রোরেলের উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলাদেশ ৪টি মাইল ফলক স্পর্শ করল। এক মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইল ফলক। দুই এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল, তিন মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি পরিচালিত হবে এবং বাংলাদেশ দ্রুত গতিসম্পন্ন ট্রেনের যুগে পদার্পণ করল।
প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল ব্যবহারকারীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিয়ম মেনে ব্যবহার করার আহ্বান জানান। অনেক টাকা খরচ করে মেট্রোরেল করা হয়েছে। এই মেট্রোরেল সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। যাতে মেট্রোরেলের কোনো কিছু নষ্ট না হয়, সেজন্য তিনি সবাই তা ব্যবহারে যত্নশীল হবেন।
তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে নিহতদের নামে স্টেশন করা হবে। তিনি জানান, মেট্রোরেলে নারীদের জন্য আলাদা কোচের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা
শেখ হাসিনার আগে ভাষণ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আজ অতি আনন্দের দিন, রাজধানীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যে আরেকটি পালক যুক্ত হলো।’
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুধী সমাবেশের মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। তার আগে তিনি উদ্বোধনীস্থলে পৌঁছান। বেলা ১১টার দিকে উদ্বোধনী ফলকের প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) জনসম্মুখে উন্মোচন করেন। তার সঙ্গে আছেন ছোট বোন শেখ রেহানা। প্রতিরূপ উন্মোচনের পর মোনাজাত করা হয়।
সুধী সমাবেশের সূচি অনুযায়ী, প্রথমে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমোহিদে, বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
উত্তরায় আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ বেলা দুইটার দিকে দিয়াবাড়ি (উত্তরা) স্টেশন থেকে মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী নিয়ে আগারগাঁওয়ের দিকে ছুটবে। প্রথম যাত্রার যাত্রী হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। সাধারণ যাত্রীরা অবশ্য মেট্রোরেলে চড়তে পারবেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে।