প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

ফারদিনের ‘মৃত্যু’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৫৭:৪৪ | আপডেট: ২ years আগে
ফারদিনের ‘মৃত্যু’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। পুরনো ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর বিষয়টি র‍্যাব-ডিবি সুন্দর করে বিশ্লেষণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের র‍্যাব, আমাদের ডিবি, বিষয়টি (ফারদিনের মৃত্যু) সুন্দর করে বিশ্লেষণ করে বলেছে।’

শুক্রবার মহান বিজয় দিবস স্মরণে রাজধানীর রাজারবাগ শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। একই সময় ফারদিনের মৃত্যু নিয়ে কোন বিষয় জানতে চাইলে র‍্যাব ও ডিবির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, সীমান্ত এলাকায় অনেকগুলো সীমান্তরেখা আছে। দুর্গম হওয়ায় পায়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। এসব এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে দুটি হেলিকপ্টার দেওয়া হয়েছে। পুলিশকেও দুটি হেলিকপ্টার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি বলেন, অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে সীমান্ত রক্ষা করা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে অনেক মতবাদের অনুসারীরা, অনেক উদ্দেশ্য নিয়ে জড়ো হয়ে সীমান্ত এলাকা বেছে নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে এমন গোষ্ঠী বান্দরবান সীমান্তে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করেছিল।

জঙ্গিবাদ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই উত্থান ঘটানোর চেষ্টা হয়েছে। আমি মনে করি, একটি গোষ্ঠী কোনো না কোনো উদ্দেশ্যে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে। আমাদের দেশে জঙ্গিবাদের শাখা-প্রশাখা বিস্তার ঘটাতে পারেনি। এটি সমূলে উৎপাটন করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। যখন আমাদের ছেলেরা ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা পাচ্ছে, তখনই তারা জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে আসছে।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধারের ৩৭ দিন পর গত বুধবার ডিএমপির ডিবি ও র‌্যাব বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেছে। পৃথক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করে।

র‌্যাব ও ডিবি উভয় সংস্থাই বলেছে, গত ৪ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টা ৩৪ মিনিটে ঢাকার ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে স্বেচ্ছায় শীতলক্ষ্যা নদীতে লাফ দেন ফারদিন।

তবে র‍্যাব ও ডিবির দাবি মানতে রাজি নন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দীন। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর এখন আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে।’

গত ৪ নভেম্বর রাত থেকে নিখোঁজ হন ফারদিন নূর পরশ। এর তিনদিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

মরদেহ উদ্ধারের দুদিন পর ১০ নভেম্বর ফারদিনের বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন। সে মামলায় বুশরাকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডেও নেওয়া হয়।

ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধারের পর র‌্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিতে দেখা যায়। তখন আলোচনায় আসে মাদক কারবারিদের সঙ্গে ফারদিনের সম্পর্ক ছিল। র‌্যাব দাবি করে, ফারদিনকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তিতে মাদক কারবারিরা খুন করেছে। তখন ডিবি পুলিশ দাবি করে ফারদিন চনপাড়ায় যাননি।